নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের শার্শায় সাবেক কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা মফিকুল হাসান তৃপ্তির সভামঞ্চে উপজেলা নেতা আবুল হাসান জহির গ্রুপ পুলিশের উপস্থিতিতেই বোমা হামলা করেছে। প- করে দিয়েছে জনসভা। রক্তাক্ত জখম হয়েছেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আল মামুন বাবলুসহ অন্তত ২৫-৩০ জন নেতা। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের গোড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলছে, পূর্ব থেকে উত্তেজনা ছিল। তবে পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, যশোরের শার্শা উপজেলা বিএনপির একাংশ নেতারা মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় নিজামপুর ইউনিয়নের গোড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তির। বিশৃঙ্খলা করতে গতকাল সকালে প্রতিপক্ষ গ্রুপও একই মাঠে সমাবেশের ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে গোড়পাড়া এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। ফলে সকাল থেকেই সমাবেশ স্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। সমাবেশের ঘণ্টাখানেক আগে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান জহির গ্রুপের বিএনপি নেতা আশরাফুল আলম বেড়ে বাবু, যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদ, সন্ত্রাসী মোগরোব, লক্ষণপুরের মোতাচ্ছাম খোকনসহ অনেকে দেশিয় অস্ত্রসহ যেখানে উপস্থিত হয়ে বোমা হামলা চালায়। মঞ্চের সামনে থাকা চেয়ার ভাংচুর করে। এসময় ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন পুলিশের নাভারণ সার্কেলের এএসপি নিশাত আল নাহিয়ান, শার্শা থানার ওসি আমির আব্বাসসহ পুলিশের টিম। তাদের সামনেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব হোসাইন।
আহত যুবদল নেতা আসাদুজ্জামান ও ছাত্রদল নেতা বিপ্লব হোসাইন জানান, সমাবেশ করার জন্য তারা আগে থেকেই পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার থেকে সমাবেশ প- করতে বিএনপির হাসান জহিরের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্র করা হয়। এক পর্যায়ে গতকাল সকালে মঞ্চের দক্ষিণপাশে তারা সামিয়ানা টাঙিয়ে সভা করবে বলে ঘোষণা দেয়। দুপুরের দিকে হাসান জহির উস্কানি দিয়ে তার ক্যাডার বেড়ে বাবু, মোতাচ্ছাম খোকন, মোগরোবের নেতৃত্বে একদল লোক দেশিয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মঞ্চের সামনে থাকা আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে। ককটেল বোমা নিক্ষেপ করা হয় ১০ থেকে ১২টি। এতে রক্তাক্ত জখম হয়েছেন উপজেলা যুবদল নেতা আল মামুন বাবলু, বেনাপোল পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম শহিদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আসাদুজ্জামানসহ অন্তত ২৫-৩০ জন নেতা।
এদিকে, হামলায় আহতদের দেখতে অনেকে নাভারণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে তাদের হাসান জহির গ্রুপ অবরূদ্ধ করে রাখে। বিএনপি নেতা জিয়াউর রহমান বলেন, শার্শার নাভারণ হাসপাতালে আহত নেতাদের দেখতে গিয়ে বিএনপির কমপক্ষে ৩০ জন নেতাকর্মী অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। হাসান জহির সমর্থকরা হাসপাতাল গেটে লাঠিসোঠা বোমা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তারা ওই হাসপাতাল থেকে তৃপ্তি সমর্থকরা বের হলে মারধর করবে বলে হুমকি দিতে থাকেন। পরে পুলিশ এলে তারা পিছু হটে।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে হুড়োহুড়ির মধ্যে হাসান গ্রুপেরও কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান জানান, সমাবেশকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকেই উত্তেজনা ছিল। আমরা ঘটনাস্থলেই ছিলাম। কিন্তু এরই মধ্যে এক পক্ষে মঞ্চ ভাংচুর করেছে। তবে পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে, গতকাল রাতে হামলায় আহত যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি একজনকে দেখতে যান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগমসহ নেতৃবৃন্দ।