নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গার আলোচিত ইসরাফিল হোসেন (৩৭) হত্যা মামলায় ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে ডিবি পুলিশ।
অভিযুক্তরা হলেন, কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুর আলম, মোশারফ হোসেন তরফদার, মর্জিনা বেগম, রাঢ়ীপুকুর গ্রামের মেহেদী হাসান, কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল আজিজ ওরফে আজিজুর রহমান ও মোহাম্মদ জনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালের ২৭ আগস্ট কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে বিড়ি শ্রমিক ও মাদক ব্যবসায়ী ইসরাফিল হোসেন নিখোঁজ হন। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ না পেয়ে এ ঘটনায় স্ত্রী রোজিনা বেগম ২৯ আগস্ট শার্শা থানায় একটি জিডি করেন। এই জিডি’র সূত্র ধরে নিখোঁজ ইসরাফিল হোসেনের খোঁজে তথ্য প্রযুুক্তির সাহায্যসহ নানা তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে প্রথমে নুর আলম, মোশারফ হোসেন তরফদার ও স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ইসরাফিল হোসেনকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের মোড়লবাড়ি বড় কবরস্থান থেকে মাটিচাপা দিয়ে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, মর্জিনা বেগমের প্রবাসী ভাই আলী নুরের স্ত্রী রিনা ও মর্জিনা বেগমের সাথে ইসরাফিল হোসেন ও মোশাররফ হোসেনের পরকীয় সম্পর্ক ও জমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের কারণে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, ভিকটিম ইসরাফিল হোসেন এবং আসামি মোশারফ হোসেন, নুর আলম ও মেহেদী হাসান ৪ জনই ছিলেন মাদকসেবী। তারা একসাথে বসে নিয়মিত গাঁজা ও ইয়াবা সেবন করতেন। এরই মধ্যে একদিন ইসরাফিল হোসেনকে হত্যা এবং এর বিনিময়ে দেড় লাখ টাকা পাওয়া যাবে বলে কৌশলে মেহেদী হাসান ও নুর আলমকে জানিয়েছিলেন মোশারফ হোসেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৭ আগস্ট রাতে মাদক সেবনের প্রস্তাব দিয়ে ইসরাফিল হোসেনকে ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে মোড়লবাড়ির বড় কবরস্থানে যেতে বলেন নুর আলম ও মেহেদী হাসান। পরে সেখানে যাওয়ার পর ইসরাফিল হোসেন, মেহেদী হাসান ও নুর আলম মাদকদ্রব্য সেবন করেন। এরই মধ্যে কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই কাছে থাকা গামছা ইসরাফিল হোসেনের গলায় পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মেহেদী হাসান। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তারা দুজনে পরে তার বুকের ওপর কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর একটি ভাঙা কবর খুঁড়ে তার মধ্যে নিহত ইসরাফিল হোসেনের লাশ মাটিচাপা দেন এই দুজনে। তিনি বলেন, তদন্তে হত্যাকান্ডের সাথে আব্দুল আজিজ ও মোহাম্মদ জনির সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এ কারণে তাদেরকেও চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে আব্দুল আজিজ বাদে অন্যদের বিভিন্ন সময় আটক করা হয়েছে। পলাতক থাকায় চার্জশিটে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়েছে আদালতে।