নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের শার্শার কন্যাদহে বিএনপির পরিচয়দানকারী রেজাউল-জনি এবং ডাবলু বাহিনীর সদস্যরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তারা শার্শা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কন্যাদহের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম শহিদের বাড়িতেও বোমা হামলা করে। শুক্রবার রাত ও শনিবার দফায় দফায় বোমার বিস্ফোরণ করে সন্ত্রাসীরা। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৪টি বোমা উদ্ধার করেছে।
তারা হলেন, কন্যাদহ গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে রমজান, হাবিবুর রহমানের ছেলে মিলন হোসেন, মতি গাইনের ছেলে হাসানুর, কিনা মোড়লের ছেলে আমিন মোড়ল, মৃত মতিয়ার গাইনের ছেলে শাহ আলম, রবিউল হোসেন ছেলে সাহেব আলী, মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে সোহাগ হোসেনসহ কয়েকজন।
আহত রমজান জানিয়েছেন, জিরেনগাছার সন্ত্রাসী ডাবলুর নেতৃত্ব কন্যাদহের রেজাউল-জনি বাহিনীর আলম, আলা, বকুল, কালু, আব্বাস, একবার, শহিদুল, সাহেব আলী, আশিক, নয়ন, মহিদুল, কউসার, বাবু, ইয়াসিনসহ অন্তত ২৫-৩০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এ ক্যাডাররা শুক্রবার রাতে কন্যাদহ বাজারে চাঁদাবাজি করতে আসে। তাদের বাধা দিলে শুরু হয় বোমা হামলা। এর সাথে বেধড়ক মারপিট শুরু করে সন্ত্রাসীরা। এলাকার লোকজন বাধা দিলে তারা বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে যুবদল নেতা ছোট শহিদের বাড়ির দিকে যায়। সেখানে গিয়ে শহিদের বাড়ির বাইরে-ভেতরে এবং বাড়ির প্রাচীরে আরও অন্তত ২৫-৩০টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এলাকার লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে এলে তারা পিছু হটে। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। অদৃশ্য কারণে পুলিশ কাউকে আটক না করেই ফিরে আসে।
পুলিশ কার্যকর ভূমিকা না রাখায় শনিবার সকালে ফের হামলা ও মারপিট করে এ চক্রটি। এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়নি। ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে শার্শা থানার ওসি কেএম রবিউল ইসলাম বলেন, নাভারণ সার্কেল এএসপি নিশাত আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। সেখান থেকে ৪টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী কেউ থানায় মামলা করতে আসেনি। এজন্য এখনো মামলা রেকর্ড করা যায়নি।
এদিকে, স্থানীয়দের ভাষ্য তারা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি, দখলদারি, মারপিট ও বোমা হামলা করছে। পুলিশও তাদের বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী মনে করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
গতবছর ৫ আগস্টের পরে তারা শার্শার লাউতোড়া গ্রামে ঘের দখল করেন। কাগজপুকুর ইটভাটা দখল এবং কন্যাদহ গ্রামের বাঁওড় দখল করেছেন। সেসময় এসব অভিযোগ জেলা বিএনপি আমলে নেয়। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব (বর্তমানের সভাপতি) সাবেরুল হক সাবু গতবছরের ৩ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলেন, রেজাউল গাইন, তার ভাই খোকন ও জনি বিএনপির পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ আসছে। প্রকৃতভাবে তাদের সাথে বিএনপির কোন সম্পর্ক নেই। কখনও ছিল না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ছিল ওই বিবৃতিতে। কিন্তু এরপরও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আজো কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
এছাড়া এলাকাজুড়ে তাদের বোমা সন্ত্রাস চলছেই। যাতে এলাকার অসহায় মানুষ আতঙ্কের মাঝে দিনাতিপাত করলেও শার্শা থানা পুলিশ কার্যকর ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।