নিজস্ব প্রতিবেদক
মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার বৈষম্য দূরীকরণে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন বন্ধ রাখা ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবিসহ ৩ দফা দাবিতে যশোরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বেসরকারি স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষা পরিবারের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন নেতৃবৃন্দ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এসএম শাহীন স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে সামাজিক ও আর্থিক বৈষম্য তৈরি করে শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব না। সিলেবাস ও দায়-দায়িত্ব একই রকম হলেও সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় বৈষম্যের শিকার তারা। মানববন্ধন থেকে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিও জানানো হয়।
তারা আরও বলেন, দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ৯৭ শতাংশ শিক্ষা ব্যবস্থা এমপিও (মান্থলি পে অর্ডার) নির্ভর। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত একই সিলেবাসে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান চললেও শিক্ষকদের বেতন-ভাতায় রয়েছে বৈষম্য। অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে তিন স্তরের পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর একজন প্রার্থী বেসরকারি শিক্ষকতায় আসেন। অথচ প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয়ার সময় এবং তৎপরবর্তীকালে তাকে বেতনভুক্ত (এমপিও) হওয়ার জন্য পোহাতে হয় নানা ঝামেলা। এসব শেষ করে যখন তিনি বেতনভুক্ত হন তখন সহকারী শিক্ষক হিসেবে তার বেসিক বেতন হয় ১২ হাজার ৫০০ টাকা, সঙ্গে ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও ১ হাজার টাকা স্পেশাল বেনিফিট। সবমিলিয়ে ১৫ হাজার টাকা। সেখান থেকে আবার বেসিকের ১০ শতাংশ অবসর-কল্যাণ ফান্ডের জন্য কেটে নেয়া হয়। অর্থাৎ সবকিছু কাটছাঁট করার পর তিনি পান ১৩ হাজার ৭৫০ টাকা। এ টাকা দিয়ে একজন শিক্ষককের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে উঠে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি যশোর সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হাশিম রেজা, ছাতিয়ানতলা কেআই সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, জিরাট আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু জাফর সিদ্দিক, শংকরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নজরুল ইসলাম বুলবুল, ছাতিয়ানতলা-চুড়ামনকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান, আব্দুস সামাদ মেমোরিয়াল একাডেমির প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, পুলেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খানজাহান আলী, হামিদপুর দারুল আমান দাখিল মাদ্রাসার সুপার একেএম মঈনুদ্দীন, যশোর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রাবনী সুর প্রমুখ। পরিচালনা করেন পুলেরহাট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ রাজিব।