নিজস্ব প্রতিবেদক
কালেক্টরেট স্কুলের স্ট্রাইক তিন বোলারের নির্ধারিত ওভারের কোটা শেষ। তখনও তাদের বাকি ছিল ৬ ওভার। এই সময় প্রতিপক্ষ যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল সরকারি স্কুলের জয়ের জন্য দরকার মাত্র ৪ রান। ক্রিজে তখন ১৮ রানে অপরাজিত রাহুল হোসেন। বাউন্ডারি লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে পঞ্চম শিরোপা উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বোর্ড স্কুলের শিক্ষার্থীরা। ৩৬ ওভারের দ্বিতীয় বলে লং অফে খেলে এক রান নেন রাহুল। স্ট্রাইক প্রান্তে আসেন বোর্ড স্কুলের শেষ ব্যাটার আলাউদ্দিন। আগের পাঁচ বল দারুণ দক্ষতায় ডিফেন্স করে দলের আস্থা অর্জন করেছিলেন। আর আলাউদ্দিনকে দেখে কালেক্টরেট স্কুলের অধিনায়ক আদ্রিব জামান বর্ণ বেশির ভাগ ফিল্ডারকে নিয়ে আসেন ১৫ গজ সার্কেলে। এই ফিল্ডিং সাজানো দেখে ফাঁকা থাকা লং অন দিয়ে চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দিতে চাইলেন আলাউদ্দিন। কিন্তু নাবিল হাসানের করা অফ স্টাম্পে পিচ করা বলটি তার মিডল স্টাম্প ভেঙ্গে যায়। তাতে প্রাইম ব্যাংক জাতীয় স্কুল ক্রিকেট প্রতিযোগিতার ফাইনাল শেষে গত কয়েকবছর হতাশায় মুচড়ে পড়া কালেক্টরেট স্কুলের শিক্ষার্থীরা উৎসবে মেতে উঠে। যশোর শিক্ষাবোর্ড স্কুলকে ২ রানে হারিয়ে চতুর্থবারের চেষ্টায় প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় এহসানুল হক সুমনের শিষ্যরা।
কালেক্টরেট স্কুলের ১২৩ রানের জবাবে বোর্ড স্কুলের টপ অর্ডার থেকে তেমন কোন রান আসেনি। ১২ রানের মধ্যে তিন উইকেট নিয়ে মূলত সেটি হতে দেননি কালেক্টরেট স্কুলের আসিফ জামান সেতু। রাহাত পারভেজ ও আরিফুজ্জামান ধাক্কাটা সামলে নিলেও তাদের ৬৭ রানের জুটি বেশি দীর্ঘ হয়নি। রাহাত পারভেজ ফেরেন ৮১ বলে ২টি চারে ৩২ ও আরিফুজ্জামান ৫৫ বলে ৩টি চারে ৩৭ রান করে ফিরে যায়। এই দুজন ফেরার পর আবার ব্যার্টিং বিপর্যয়ে পড়ে বোর্ড স্কুল। তবে একপ্রান্তে চেষ্টা করেছিলেন রাহুল। তবে তাকে সঙ্গ দেয়ার কেউ ছিল না। রাহুল শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৯ রানে।
বোর্ড স্কুলের আসিফ জামান সেতু ৩৩ রানে ৪টি, নাবিল হাসান ৬ রানে ৩টি, তারিক সামি, ফারহান ফাহাদ ও সাদমান খান একটি করে উইকেট দখল করেন।
এর আগে সকালে পিচ ভেজা থাকায় কারণে ৪২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে যশোর শিক্ষা বোর্ড প্রথমে টসে জিতে কালেক্টরেট স্কুলকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায়। কালেক্টরেট প্রথমে ব্যাট করে ৪০ ওভার ৩ বলে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১২৩ রান করে। ব্যাট হাতে দলের সৈয়দ আনোয়ার রাহিব ৫৫ বলে ৪টি চারে ৩০, রাকিবুল হাসান রনি ২৭, মাহাদি আপন ২৫ রান করেন। যশোর শিক্ষা বোর্ড স্কুলের আরিফুজ্জামান ২৪ রানে ৩টি, সানোয়ার হোসেন রনি ও সোহান হোসেন ২টি করে উইকেট দখল করেন।
খেলা শেষে প্রধান অতিথি যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব কবির পুরস্কার বিতরণ করেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহি সদস্য খায়েরুজ্জামান বাবুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাইম ব্যাংক যশোর শাখার ব্যবস্থাপক মোস্তফা মাহমুদ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক এমএ আকসাদ সিদ্দিকী শৈবাল। ক্রীড়া সংগঠক নিবাস হালদারের উপস্থাপনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ ও ক্রিকেট পরিষদের সম্পাদক সোহেল মাসুদ হাসান টিটো।
