সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার মারা গেছেন।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৮টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলাম আব্দুস সাত্তারকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার কলারোয়া উপজেলার কয়লা গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে ও কলারোয়ার কয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
সাতক্ষীরা কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, রাতে আব্দুস সাত্তার শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্ট আবুল বাসার জানান, সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তারে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে দ্রুত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত সোয়া ৮টার দিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
সাতক্ষীরার প্রধানমন্ত্রী গাড়িবহরে হামলার তিনটি মামলায় সাড়ে তিন বছর সাজা হয় আব্দুস সাত্তারের। তিনি গত ২৭ জানুয়ারি থেকে কারাগারে কয়েদি হিসেবে বন্দি ছিলেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদী গ্রামের একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস রাস্তার ওপর দাঁড় করিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও তখনকার সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামের হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জুর নির্দেশে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালান।
এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার গাড়িবহরে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল হক রাসেল, রমনা এলাকার যুব মহিলা লীগের নেত্রী ফতেমা জামান সাথী, আওয়ামী লীগ কর্মী আব্দুল মতিনসহ ১২ জন নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক থানার ভেতরে আশ্রয় নিলেও তাদের পিটিয়ে জখম করা হয়। ভেঙে দেয়া হয় তাদের ক্যামেরা। ছিনিয়ে নেয়া হয় মোবাইল ফোন, ঘড়ি ও টাকা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরের ভাঙচুর করা হয়।
সাতক্ষীরা জজকোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ফাইমুল হক জানান, কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ৩টি মামলায় বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার ওরফে সাত্তার মাস্টার ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়।
