নিজস্ব প্রতিবেদক
সদ্য পদত্যাগকারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে গতকাল উত্তাল হয়ে উঠে যশোরের রাজপথ। ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে জেলা বিএনপি আয়োজিত দ্বিতীয় দিনের অবস্থান কর্মসূচিতে শহর উত্তাল হয়ে ওঠে। শহরের চৌরাস্তা মোড়ে জেলা বিএনপির আয়োজনে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এদিন বিএনপির ডাকে কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অন্যান্য পেশাজীবীরাও রাজপথে নেমে এসে কর্মসূচি পালন করেন। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
জেলা বিএনপি আয়োজিত চৌরাস্তা মোড়ের অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের ঝনঝনানি অনেক সহ্য করেছি। প্রতিশোধ পরিবর্তে ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু নতুন করে এই সন্ত্রাসীরা যদি সেই অস্ত্রের প্রদর্শন কিংবা কোন ধরণের অরাজকতা করে জনগণের ক্ষতিসাধন করার চেষ্টা করে তাহলে তার দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কোন ক্ষমা হবে না, ক্ষমা আমরা করবো না। শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমরা রাজপথে আছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত না করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কেউ রাজপথ ছেড়ে যাব না অমিত আরও বলেন, বুধবার গভীর রাতে আমার এক মহিলা দলে নেত্রীকে তার বাসায় ঢুকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। তার কিছু দিন আগে আমার এক বিএনপি কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গত ১৭ বছরে আমার দলের ৯৮ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এই যশোরে আমার দলের আর একটি নেতাকর্মী কিংবা সাধারণ জনগণের গায়ে যদি ফুলের টোকা পড়ে যে কোন মূল্য আমরা সেটি রুখে দেব।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, অবিলম্বে সকল অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। যাদের কাছে বৈধ অস্ত্র আছে, তাদের জমা দেওয়ার নোটিশ দেন। আর অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেন। আপনারা অতীতে কোন ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার কিংবা বিচারের আওতায় আনেননি। আমি আশা করবো পেশা দারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে অবিলম্বে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং গ্রেফতারের ব্যবস্থা করবেন। আর যদি সেটি করতে ব্যর্থ হন, তার কোন দায়ভার আমার দল নেবে না ।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, অ্যাড. মো ইসহক, গোলাম রেজা দুলু, সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, একে শরফুদ্দৌলা ছোটলু, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, সিরাজুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল প্রমুখ। কর্মসূচি পরিচালনা করেন, নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মাসুম ও ফারুক হোসেন ।
শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজিত যৌথ অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম যশোর ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান। অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্তজা ছোট, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান, সাবেক সভাপতি নূর ইসলাম, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি যশোর জেলা শাখার সভাপতি উপাধ্যক্ষ মকবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইবাদত খান, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুর রহমান মধু, যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক আসাদুজ্জামান শাহিন, চিকিৎসক নেতা আবুল কালাম আজাদ লিটু, শিক্ষক নেতা রাজীব মাহমুদ প্রমুখ ।
মণিহারস্থ খুলনা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় নগর ও সদর উপজেলা বিএনপি যৌথ আয়োজিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন, বিএনপি নেতা মাসুদুল বারী কাক্কু। কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক পার্টির (জাকপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য নিজাম উদ্দিন অমিত, সাবেক জেলা বিএনপি নেতা মহিবুর রহমান হিরন, জেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক নাজমুল হোসেন বাবুল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাজু আহমেদ প্রমুখ ।
খাজুরা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় উপশহর ও নওয়াপাড়া ইউনিয়ন এবং নগর বিএনপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার আয়োজনে কর্মসূচি পালিত হয়। উপশহরের ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবু হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহামান খান, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপি নেতা আলা উদ্দিন, মারুফ হোসেন, মশিয়ার রহমান বাবলু, আলতাফ হোসেন, যুবদল নেতা রফিকুল ইষলাম রতন, কামরুল ইসলাম প্রমুখ। চাঁচড়া বাজার মোড়ে চাঁচড়া ও আরবপুর ইউনিয়ন বিএনপি যৌথ আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন, চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম। বক্তব্য রাখেন, বিএনপি নেতা ফজলুল আলম, মেহেদী হাসান সমির, জাহিদ হোসেন টিটো, খায়রুল ইসলাম, মাসুদুর রহমান প্রমুখ।