নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের লোকজন ঘাপটি মেরে আছে। পুলিশ ও অন্যান্য প্রশাসনে এখনো তাদের লোক রয়েছে। শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে তারা দেশে কৃত্রিম অরাজকতা সৃষ্টি করছে। দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। রোববার বিকেলে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শুধু পুলিশ বা প্রশাসন নয়, বিচার বিভাগও ছিলো শেখ হাসিনার জল্লাদখানা। বিচারক, বিচারপতি পদে নিজের লোক দিয়েছেন। খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের সাজা দিতে তিনি এ অপতৎপরতা চালান। তিনি বলেন, আমরাতো ১৬ বছর অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। আয়না ঘরে দিনের পর দিন থাকতে হয়েছে। ডিবি কার্যালয়ের গারদ ঘরে কোন প্রকার খাওয়া দাওয়া ছাড়াই নির্যাতন নিপীড়নের মধ্য দিতে থাকতে হয়েছে। তারপরও আমরা শেখ হাসিনার সাথে আপোষ করিনি। কারণ এই দেশের এক পরিত্যক্ত, জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত একজন শেখ হাসিনা। যিনি জনগণের রক্ত ভালোবাসেন; যিনি জনগণের রক্ত পান করতে ভালোবাসেন। সর্বশেষ জুলাই অভ্যুত্থানে তিনি গণহত্যার স্কুলের শিশু বাচ্চা, কিশোর তরুণ গণহত্যা করে রক্ত পান করে গেছেন। এই পরিস্থিতি যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কিছু মানুষকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার সুযোগ দিয়ে গোটা জাতিকে অন্ধকারের নিমজ্জিত করে গেছেন। ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশ। এই দেশ কিভাবে চালাবো। আমাদের গণতন্ত্র কিভাবে প্রতিষ্ঠিত করবো সেখানে আমাদের অধিকার নেই।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ভারতের কহিনুর ছিলেন শেখ হাসিনা। এত দামি একটি হীরা হারিয়ে ওদের মনকষ্ট থামছেই না। ভারত ছাড়া শেখ হাসিনাকে পৃথিবীর কেউ সমর্থন করেনি। ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনারা এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের রেখেছেন কেন? এরাই তো সবচেয়ে বড় আওয়ামী ফ্যাসিবাদে দোসর। এই যশোরের এমপির মত একেকটি এলাকার দুর্বৃত্ত এমপিরা তাদের নিজেদের পান্ডা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বর বানিয়েছেন। সুতরাং অবিলম্বে এদেরকে প্রত্যাহার করতে হবে।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণহত্যাকারী ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে এবং গোপালগঞ্জে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ওপর আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হামলা এবং হামলায় ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারকে হত্যার প্রতিবাদে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল গণসমাবেশের আয়োজন করে।
গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সালের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি সরদার নুরুজ্জামান, যুগ্ম-সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহসভাপতি নির্মল কুমার বিট, সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হায়দার রানা, যুগ্ম-সম্পাদক রেজোয়ানুল ইসলাম খান রিয়েল, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোস্তফা তরফদার রয়েল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।