নিজস্ব প্রতিবেদক
‘লিগ শেষে কোথায় থাকবো জানি না, তবে জেলার সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারদের খেলার সুযোগ করে দিতে চাই’। যশোর প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের দলবদল নিয়ে আরএন রোড ক্রীড়া চক্রের এক কর্মকর্তা এমনই মন্তব্য করেন। সেই হিসেবে দলটি এবার শাহারিয়ার সাকিব-অরিদুল ইসলাম আকাশ-রাহুল হোসেনের মতো উদীয়মান খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠন করে। তারুণ্য নির্ভর সেই দল নিয়ে তৃতীয় হয়ে লিগের অভিযান শেষ করলো গতবারের রানার্সআপ হওয়া দলটি।
বুধবার নিজেদের শেষ ম্যাচে ম্যাগপাই ক্লাবকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। শামস্-উল-হুদা স্টেডিয়ামে ম্যাগপাই ক্লাবকে ১১৪ রানে থামিয়ে ২৯ ওভার ১ বলে ৬ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্য টপকে যায় আরএন রোড ক্রীড়া চক্র।
দলের জয়ে ব্যাট বলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের হাইপারফরম্যান্স স্কোয়াডে থাকা বাঁহাতি স্পিনার অরিদুল ইসলাম আকাশ। বল হাতে ৯ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। পরে ব্যাট করতে নেমে খেলেন ৩০ রানের ইনিংস।
এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ম্যাগপাই ক্লাবের অধিনায়ক রুবেল আফ্রিদি। মেঘলা আকাশে নিচে বল হাতে পেয়ে প্রথম ওভারে কোন লাইনই খুঁজে পাচ্ছিলেন না বাঁহাতি পেসার। অনূর্ধ্ব-১৮ দলে খেলা রাহুল প্রথম ওভারেই দেন পাঁচটি ওয়াইড। দ্বিতীয় ওভারেই বাঁহাতি স্পিনার আকাশের হাতে বল তুলে দেন দলীয় অধিনায়ক শাহারিয়ার সাকিব। পঞ্চম বলে উইকেটের দেখা পান আকাশ। তৃতীয় ওভারে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন। প্রথম স্পেলে টানা ৭ ওভার করা আকাশ দেন ৯ রান। এর মাঝে ইমন ফারাজি মহাসিনকে তুলে নিলে ১২ রানে ৩ উইকেটের দলে পরিণত হয় ম্যাগপাই ক্লাব। এরপর মিরাজ মামুন ও সাইদুজ্জামান সাধ ও শহিদুলের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানো চেষ্টা করে। মিরাজ মামুন আর এক বাঁহাতি স্পিনার মেহেদি হাসান শিবলির শিকার হলে ভাঙ্গে ৩৪ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। দারুণ খেলতে থাকা সাধকে আকাশের ক্যাচ বানান ডানহাতি পেসার ইয়াসিন। শেষ স্পেল করতে আসা আকাশ নিজের প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটটিকের সুযোগ সৃষ্টি করে। হ্যাটট্রিক না হলেও তিন ওভারে কোন উইকেট নিতে পারেনি প্রতিপক্ষরা। তাতে তার দশ ওভারের কোটা শেষ করেন ৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে। এর মাঝে পাঁচটি মেডেনের দেখা পান। আকাশের টানা দুই উইকেটে খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি ম্যাগপাই ক্লাব। শেষ পর্যন্ত ৪৫ ওভার ১ বলে ১১৪ রান করতে পারে। দলের পক্ষে শহিদুল সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন। শহিদুলের ৫৮ বলের ইনিংসে ছিল চারটি চারের মার। এরপাশে সিফাত ১৮, সাধ ১৫ ও মিরাজ মামুন ২১ রান করেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ছয় রানেই প্রথম উইকেট হারায় আরএন রোড ক্রীড়া চক্র। তবে আর এক ওপেনার শাহারিয়ার ে কোন বিপদ ঘটতে দেয়নি। প্রথমে শাহারিয়ার সাকিবকে (১৩) নিয়ে গড়েন ২৯ রানের জুটি। পরে আকাশকে নিয়ে গড়েন ৫৯ রানের জুটি। দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে সিফাতে শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন শাহারিয়ার। তার আগে খেলেন ৫৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও একটি ছয়ের মার। পরে সুমনকে নিয়ে দলকে জয়ে কাছাকাছি নিয়ে যান আকাশ। তবে জয় নিশ্চিত করে ফিরতে পারেনি। জয়সূচক রানের সময় মারতে গিয়েছিলেন ছক্কা। তাতে শাওনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরতে হয় তাকে। তার আগে করেন ৩০ রান। ৫৪ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চারের মার। সুমন ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন। ম্যাগপাই ক্লাবের সিফাত ও শাওন দুটি করে উইকেট দখল করেন।