দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গোটা দেশ যখন উন্নয়নের শিখরে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনি ঝিনাইদহের শৈলকুপার আড়ুয়াকান্দিতে কুমার নদীর ওপরে একটিমাত্র ব্রিজের অভাবে প্রতিদিন হাজারো মানুষ বিড়ম্বনায় পড়ছে। উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিয়ে কৃষকরা বহুদূর ঘুরে উমেদপুর ইউনিয়নের রয়েড়া বাজারে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ খরচ করে যাচ্ছেন। নদীর ওপর পারের শতশত কোমলমতি শিক্ষার্থীও একই সমস্যা পোহালেও দেশ স্বাধীন হবার অর্ধ শতাব্দি পরও তেমন কোন উন্নয়ন চোখে পড়ছে না এলাকার। আড়ুয়াকান্দি ঘাটে কুমার নদীতে পারাপারের জন্য ব্যক্তি উদ্যোগে ছোট্ট একটি নৌকা থাকলেও মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল পারাপার করাও সম্ভব হচ্ছে না, জানালেন এলাকবাসী।
শুক্রবার বিকেলে আড়ুয়াকান্দি ঘাটে কথা হলো বেশ কয়েকজন নারী ও পুরুষের সাথে। তারা জানালেন, ওই ঘাটের আশেপাশের রয়েড়া, উমেদপুর, ভান্ডারিপাড়া, গোবিন্দপুর, দামুুুকদিয়া, বিষুদিয়া, মাধবপুর ও মনোহরপুরসহ ১২টি গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত যেতে হয় রয়েড়া বাজার বা পাশ^বর্তী এলাকার প্রাইমারি ও হাইস্কুল, মাদরাসা, পোস্ট অফিস, তহশিল অফিস ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। নদী পারাপারে ভালো সুযোগ না থাকায় কৃষকদের তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয় বিকল্প পথে। অনিচ্ছাসত্ত্বেও তারা বাধ্য হন উপজেলা সদরের ভেতর দিয়ে চলাচল করতে। এতে যেমন তাদের অতিরিক্ত অর্থ খরচ হয়, ৩-৪ গুণ সময়ও বেশি ব্যয় করতে হয়। ওই ঘাটে নৌকায় মোটরসাইকেল বা বাইসাইকেল কোনটাই পারাপার করা যায় না। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরাও এ সমস্যার বাইরে নয়। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট্ট নৌকায় যাতায়াত করে স্কুল, মাদরাসা ও অন্য শিক্ষালয়ে। মাঝেমধ্যে নৌকাডুবির ঘটনাও বিচিত্র নয়, জানালেন তারা।
রয়েড়া বাজারে ছোট্ট একটা ব্যবসা চালান মনির উদ্দিন। তিনি জানালেন, সকাল-বিকেল মোট চারবার নদী পারাপারে তাকে দিতে হয় ২০ টাকা। তার মত সবাই কমবেশি ২০ থেকে ৩০ টাকা দেন পারাপারের জন্য জানালেন মনির উদ্দিন। অফিল উদ্দিন নামে এক বয়স্ক কৃষক জানালেন, ‘ছোটবেলা থেকে তার এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানদের মুখে শুনে আসছেন এখানে কুমার নদীর ওপরে ব্রিজ হবে। সারাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ঢেউ বইয়ে দিচ্ছে, আমাদের এলাকায় সে ঢেউ কবে লাগবে আর আমরা পরিত্রাণ পাবো’!
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিমের সাথে কথা বললে তিনি জানালেন, আড়ুয়াকান্দি অথবা রয়েড়া ঘাটে কুমার নদীর ওপরে ব্রিজ নির্ম্যাণের বিষয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অল্পদিনের মধ্যেই সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে। উপজেলা প্রকৌশলী রুহুল আমিনের সাথে আলাপ করলে তিনি জানালেন, ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে তারা উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের কাছে বহু আগেই প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। কিন্তু কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তÍ পাওয়া যায়নি।
