নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই সম্প্রীতির বাংলাদেশের জন্ম হতো না। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার স্বপ্ন পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন মন্তব্য করে যশোর-৩ (সদর) আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র রুখতে প্রশাসনসহ স্বাধীনতা স্বপক্ষের মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনে দুই দিনব্যাপী শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ১৮৭তম জন্মতিথি ও বার্ষিক উৎসবে সম্মানিত অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী জ্ঞানপ্রকাশানন্দের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।
এমপি কাজী নাবিল আহমেদ, অগ্নিঝরা মার্চ ও স্বাধীনতা মাস মার্চে সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশের সব সম্প্রদায়ের মানুষ সশস্ত্র ও রক্ষক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা এনেছেন। তিনি বলেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার-এই মন্ত্র ধারণ করে দেশে চলমান উন্নয়ন ও শান্তির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সব ধর্মই কল্যাণের কথা বলে। সীমিত জ্ঞানের কারণে দেশে মাঝে-মধ্যে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এদেশ সবার। পারস্পারিক শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপ্ন ভট্টাচার্য্যঅনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আমন্ত্রিত থাকলেও বিশেষ কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি।
এরআগে সকালে মানবিক উন্নয়নের আহ্বান জানানোর মধ্যদিয়ে এই উৎসব শুরু হয়। সকালে মঙ্গলারতি, সমবেত প্রার্থনার মাধ্যমে ভোর পাঁচটা থেকে সূচনা হয় উৎসবের। এদিন সকাল আটটায় শুরু হয় বিশেষ পূজা, হোম, ভজন সংগীত ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদান। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জন্মতিথি ও বার্ষিক এ উৎসবে ভক্তি ও শ্রদ্ধায় সমর্পিত হয়ে মানবকল্যাণের জয়যাত্রা সমুন্নত রাখতে উৎসবে সামিল হন অগনিত ভক্ত।
দেবাশীষ রাহার সঞ্চালনায় মুখ্য আলোচক ছিলেন খুলনা সরকারি ব্রজলাল কলেজের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রেমানন্দ মন্ডল। স্বাগত বক্তব্য দেন যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনের সহসম্পাদক স্বামী আত্মবিভানন্দ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রবীণ শিক্ষক তারাপদ দাস।
এরআগে নৃত্য পরিবেশন করে শিশুশিল্পীরাজর্ষী সরকার, প্রান্তিক সিংহ রায়, সপ্তর্ষী অধিকারী, উপমা সাহা ও ঝিনুক বণিক। যশোর নীলগঞ্জ বালিয়াডাঙ্গার উজ্জ্বল হালদার ও তার দলের রামায়ণী সংগীতের ছান্দসিক সুরময়তার ভক্তিপূর্ণ উচ্চারণ উপস্থিত দর্শকশ্রোতা ও ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে উৎসবস্থল মুখরিত হয়।
ভরসন্ধ্যায় অস্থায়ী উৎসবমঞ্চে ভক্তিগীতি পরিবেশন করেন সঞ্জিত কুমার মল্লিক, তরুণ হালদার বাপন প্রমুখ। দুপুর থেকে রাত অব্দি অন্ন প্রসাদ বিতরণ করেন আয়োজক কমিটি। আজ শনিবার উৎসবের সমাপনী দিনে শিশুদের পরিবেশনায় বিচিত্রানুষ্ঠান, ‘শ্রীমা সারদাদেবী ও স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষা ও আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা এবং সংগীতানুষ্ঠান হবে।