কল্যাণ ডেস্ক
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে বুধবার তাদের প্রচারণা শেষ করেছেন। প্রার্থীরা তাদের প্রচারণায় দ্বীপ দেশটির রুগ্ন অর্থনীতি শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ১ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি শ্রীলঙ্কান পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ প্রার্থী কারা?
রনিল বিক্রমাসিংহে
রেকর্ড ছয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আইনজীবী বিক্রমাসিংহের দল পার্লামেন্টে মাত্র একটি আসন পেয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ২০২২ সালে রাজাপাকশের পালিয়ে যাওয়ার পর দায়িত্ব নিয়ে রনিল বিক্রমাসিংহে দেশটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনেন। ২০১৯ সালে দায়িত্ব নেওয়া রাজাপাকসের পাঁচ বছরের মেয়াদের বাকি সময়টুকু বিক্রমাসিংহেকে নির্বাচিত করে পার্লামেন্ট।
২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল শ্রীলঙ্কা পোদুজানা পেরামুনার (এসএলপিপি) কাছ থেকে বিক্রমাসিংহের পুনঃনির্বাচনের প্রচেষ্টা আনুষ্ঠানিক সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ৯০ জনেরও বেশি আইনপ্রণেতার সমর্থন তাকে শক্ত অবস্থানে রেখেছে। বিক্রমাসিংহে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অনুরা কুমার দিসানায়েকে
বিক্রমাসিংহের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনুরা কুমারা দিসানায়েকে। সংসদে মাত্র তিনটি আসন থাকা সত্ত্বেও দিসানায়েকের কঠোর দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ এবং দরিদ্রবান্ধব নীতির প্রতিশ্রুতি তাকে অনেক জনপ্রিয় করে তুলেছে। তিনি ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের অধীনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, যার মধ্যে তার মার্কসবাদী মনোভাবাপন্ন দল পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট রয়েছে। প্রাক-নির্বাচনী জনমত জরিপে দেখা গেছে, দিসানায়েক ৩৬ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। অপরদিকে প্রেমাদাসা ও বিক্রমাসিংহে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
সাজিথ প্রেমাদাসা
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরও একজন আলোচিত প্রার্থী রয়েছেন। তিনি ১৯৯৩ সালে গৃহযুদ্ধের সময় আততায়ীর হাতে নিহত সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসার ছেলে সাজিথ প্রেমাদাসা। তিনি সামাগি জানা বালাওয়েগায়ার (এসজেবি) নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা ২০২০ সালে বিক্রমাসিংহের ইউএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। একসময় তাকে রাজপুত্র হিসেবে উপহাস করে রাজনীতিতে খুবই কম গুরুত্ব দেওয়া হতো। তবে এই নির্বাচনে তিনি বেশ ভালো করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি আইএমএফের কাছ থেকে শিথিল শর্ত আদায় ও জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নামাল রাজাপাকসে
প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবারের বংশধর নামাল রাজাপাকসে। তার বাবা মাহিন্দা ও চাচা গোতাবায়া, তিনি আরেক চাচা বাসিলের প্রতিষ্ঠিত শ্রীলঙ্কা পোদুজানা পেরামুনার (এসএলপিপি) প্রার্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। বিক্রমাসিংহের জয় মোকাবিলায় দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার কঠিন কাজের মুখোমুখি হতে হবে তাকে।
নুয়ান বোপেজ
পিপলস স্ট্রাগল অ্যালায়েন্সের প্রার্থী বোপেজ দুই বছর আগে গোতাবায়া রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করা ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের একাংশকে কাজে লাগানোর আশা করছেন। তার দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও দরিদ্রবান্ধব নীতি এবং আইএমএফ কর্মসূচির সঙ্গে শ্রীলঙ্কার প্রান্তিককরণের বিরোধিতা অনেকটা প্রশংসা পেয়েছে।