নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে রাজিব হত্যা মামলার আসামি সজিবকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রাজিব হত্যার কারণ উদঘাটন হবে বলে দাবি করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের এস আই জিয়াউর রহমান। ২০১৪ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিয়াদ হত্যা মামলায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা সজিবকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই জিয়াউর রহমান শ্যোন এ্যারেস্ট দেখায়। ওই দিনই একই আদালতে সজিবকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।
শুক্রবার রাজিব হত্যার কারণ জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই জিয়াউর রহমান বলেন, রাজিব হত্যা মামলার একমাত্র এজাহারভুক্ত আসামি সজিবকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রাজিব হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন হতে পারে। ১৮ জানুয়ারি আদালতে আবেদন করে সজিবকে শ্যোনএ্যারেস্ট দেখানো হয়। ওই দিনই একই আদালতে সজিবকে ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়। রিমান্ড মঞ্জুর হলে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসতে পারে রাজিব হত্যার কারণ।
চলতি বছরের ৩০ মে শহরের পুরাতন কসবা নিরিবিলি এলাকার মৃত আকবর আলীর ছেলে বজলুর রহমানের বাউন্ডারী দেয়া ঘেরা জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য খোঁড়াখুড়ি করা হয। এ সময় পরিত্যক্ত পুরাতন টয়লেটের রিং স্লাবের কুয়ার ভিতর একটি নীল রঙ্গের প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি পাওয়া যায়। ওই জায়গায় রাজিব কাজ করতো। ওইখানেই সজিবের অফিস ছিলো। রাজিব নিখোঁজের পর সজিবের অফিস ভেঙ্গে ফেলা হয়। ঘটনাটির বিষয়ে পিবিআই ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে।
ছায়া তদন্তে সময়ে জানা যায়, রাজীব হোসেন কাজী (৩২) খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার চন্দোলি মহল গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে। শহরের পুরাতন কবসা মানিকতলায় রাজিবের চাচা হাসমতের বাসায় থেকে পুরাতন কসবা আবু তালেব সড়কের আজিজুল হক বুকড়ার ছেলে শেখ সজিবুর রহমানের (৩৪), বাসায় ও অফিসে কাজ করত। ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ রাত অনুমান ৮ টার দিকে রাজিব তার পিতাকে ফোন করে সে তাদের খুলনার বাড়িতে আসছে বলে জানায়। কিন্তু রাজীব খুলনায় তাদের বাড়ীতে যায় না। রাজীব বাড়িতে না যাওয়ায় তার পিতা ফারুক হোসেন রাজীবের মোবাইল ফোনে কল করে মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে ভাই হাসমতের সাথে যোগাযোগ করে। হাসমত জানায় ২৯ মার্চ থেকে রাজীবকে তারাও পাচ্ছেনা।
কয়েকদিন পর রাজিবের মা মাবিয়া বেগম রাজীবের খোঁজে যশোরে আসে। রাজিবে মা মাবিয়া বেগম ও চাচা হাসমত সজীবের বাসায় গিয়ে রাজিবের খোঁজ করলে সজীব জানায় রাজিব কোথায় গেছে সে জানে না। সে আরও বলে তারা যেন মামলা মোকদ্দমা করে ছেলেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করে। রাজিবে মা ও চাচা রাজিবকে যশোর শহরের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে। সজীবের অফিস, বাড়ী ও সম্ভব্য সকল জায়গায় খুঁজাখুঁজি করে কোন সন্ধান না পেয়ে তারা নিরুপায় হয়ে পড়ে। রাজিবের মা নিরুপায় হয়ে বাড়ীতে ফিরে যায়। ছায়া তদন্তকালে রাজিবের পিতা ফারুক হোসেন পিবিআই অফিসে যেয়ে ছেলেকে সনাক্তের জন্য অনুরোধ করে। গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত একটি জিডি হয়। জিডির সূত্র ধরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান ডিএনএ পরীক্সার মাধ্যমে নিশ্চিত হয় উদ্ধারকৃত কঙ্কাল ফারুক হোসেনের ছেলে রাজিব। এতে নিশ্চিত হয় রাজিবকে হত্যা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডলার সংকট : ৭ দিন ধরে উৎপাদন বন্ধ রামপালে
১ Comment
Pingback: শরণখোলায় গাছ চাপা পড়ে গৃহবধূর মর্মান্তিক মৃত্যু - দৈনিক কল্যাণ