নিজস্ব প্রতিবেদক
সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরতে শুরু করলেও মাছ ও মাংসের বাজারে দাম এখনো চড়া। ইলিশের দাম কিছুটা কমলেও এখনো তা সাধ্যের বাইরে। কিছুটা বেড়েছে মুরগির দাম, তবে অন্যান্য মাংস বিক্রয় হচ্ছে একই দামে।
এছাড়া সরকার ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির আগেই খুচরা বাজারে তেলের দাম লিটারে বেড়েছে ৩-৫ টাকা। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল প্রতিকেজি ১৯০ টাকা। যা কয়েকদিন আগেও ১৮৫ টাকা পাওয়া যাচ্ছিল।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) যশোর শহরের বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, রেল বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
একমাসে কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা বৃদ্ধির পর ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগি ২৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০ টাকায় উঠেছে। দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডোর মুরগি বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে চাহিদা বেড়েছে, সরবরাহ তুলনামূলক কম। দুর্গাপূজা সামনে, তাই দাম আরও বাড়তে পারে।
বাজারঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি শসা ৫০-৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঝিঙে ৬০-৮০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা, আমড়া ৬০ টাকা ও কচুর মুখি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি করলা ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০-৭০ টাকা, টমেটো ১২০-১৪০ টাকা, বরবটি ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৫০-৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, কাচা কলা ৬০, বেগুন ১০০-১২০ টাকা ও কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।
আর প্রতি পিস লাউ ৫০-৬০ টাকা ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৬০-২০০ টাকা, আলু ২০-২৫ ও পেয়াজ ৭০-৭৫ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। এছাড়া শীতের আগাম সবজি মেচরি ১৬০টাকা ও ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা কেজি।
গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৬০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস এক হাজার ২০০ টাকা।
স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের দামও। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা ও সাদা ডিম ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি ডজন হাঁস ও দেশি মুরগির ডিম যথাক্রমে ২২০-২৩০ ও ২৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বর্তমানে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২১০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭৫০-১৮৫০ টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য মাছের দাম রয়েছে আগের মতোই চড়া। প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০, কোরাল ৮০০-৮৫০, আইড় ৭০০-৮০০, চাষের রুই ৩৮০-৪৫০, কাতল ৪৫০, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩৫ এবং পাবদা ও শিং ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চাষের ট্যাংরা ৭৫০-৮০০, কাঁচকি ৬৫০-৭০০ এবং মলা ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারে কোনো বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। চাল ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘নতুন করে দাম বাড়েনি। তবে কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৮০-৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯২ টাকা ও মোটা চাল ৫৬-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে বাজার করতে আসা গৃহবধূ শাহিনা আক্তার জানান, সংসারে অর্থের যোগান না বাড়লেও সব দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালানো এখন দায়। বাজারে গেলে মনে হয় সব পণ্য হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। মাছ-মাংস যেন বিলাসী খাবার হয়ে গেছে। আমাদের মত নি¤œ আয়ের মানুষের সংসার চালানো অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
যশোর শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের হালিমা স্টোরের হালিমা বেগম বলেন, তেলের দাম বাড়ার আগেই বোতলজাত সোয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৩-৪ টাকা বেশি নিচ্ছে আমাদের কাছ থেকে। এজন্য আমাদেরও তেলের দাম বেশি বিক্রি করতে হচ্ছে।