নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, আমরা জনগণের স্বার্থে তাদের ন্যায্য আদায়ে রাজপথে নেমেছি। যতই বাধা আসুক না কেন, রাজপথে এই অধিকার আদায়ে কথাবলা অব্যাহত থাকবে। নদীর স্রোত যখন প্রবাহিত হয়; সেই নদীর স্রোতের সামনে দাঁড়ালে কেউ টিকে থাকতে পারেন না।
যখন প্লাবন থাকে তখন কোন দেয়াল বাধা হিসাবে থাকতে পারে না। সুতরাং যেমনভাবে সাধারণ মানুষের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়; ঠিক তেমনি সাধারণ মানুষের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। আমরা জনগণকে সাথে নিয়েই সেই পথ অবলম্বন করে যাচ্ছি। এখানে যদি কেউ বাধা সৃষ্টি করেন তিনি টিকতে পারবে না।
শনিবার বিকালে যশোর শহরের লালদীঘিস্থ জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সমাবেশ ও গণমিছিলের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটি সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সকল নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি জানানো হয়। সমাবেশকে কেন্দ্রে করে বিএনপির দলীয় চত্বরসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। সুন্দর নির্বাচনের সংস্কৃতি আওয়ামী লীগের মধ্যে নেই। সেখানে বিএনপি একটি অবাধ নির্বাচনের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার লড়াই করে যাচ্ছে। বিএনপি যখন জনগণের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে, তখন আওয়ামী লীগ সেই আন্দোলনকে সম্মানবোধ না দেখিয়ে একের পর এক তাদের পেটুয়া বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হামলা মামলা করে যাচ্ছেন।
সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর গায়েবি মামলা হামলায় জর্জারিত করে ফেলছে। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা লুটপাট করেছে। ক্ষমতায় থেকে যারা এসব করে যাচ্ছেন; তাদের আমরা চিহ্নিত করে যাচ্ছি। সরকার বদল হলেই এসব কর্মের হিসাব নেওয়া হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিক অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি জেএফআই গ্লোবালের প্রকাশিত তথ্যের পরিসংখ্যানের চিত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় থেকে ব্যাংকগুলো খালি করে ফেলেছে। সরকারের নেতা আমলারা টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সরকারের ক্ষমতায় থাকাকালীন যে পরিমাণ টাকা এই দেশ থেকে পাচার হয়েছে; সেই টাকা দিয়ে অন্তত ১০টি পদ্মাসেতু হয়ে যেত। ক্ষমতায় যেয়ে এসব পাচারকারীদের হিসাব নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ মুসা, শার্শা উপজেলার সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, কেশবপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান প্রমুখ।
এছাড়া জেলা ও উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুর থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হন সমাবেশ স্থলে। এসময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় সমস্ত লালদীঘি এলাকা। সন্ধ্যায় নেতৃবৃন্দ গণমিছিল বের করে। মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।