মারুফ রায়হান, মাগুরা: মাগুরার শালিখায় সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। চারিদিকে হলুদের সমারোহ। হলুদের নান্দনিক সৌন্দর্যে প্রকৃতি হয়ে উঠেছে রঙিন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের অর্থায়নে প্রদর্শনী বাস্তবায়ন ও রবি মৌসুমে প্রণোদনার কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের মাঝে সরিষা বারি-১৪, বারি-১৭, বারি-১৮, বিনা-৪, বিনা-৯, টরি-৭, বীজ ও সার বিতরণ করা হয়।
গত বছর ৩ হাজার ৬৮৯ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত সরিষা থেকে হেক্টর প্রতি ১.২ টন ফলন হয়েছিল। তবে এবছর এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে সরিষা বীজ বপণ করা হয়েছে। আমন ধান কাটার পরে পরবর্তি ধান চাষের মাঝে সরিষা চাষ জমি প্রস্তুতের আসল সময় তাই সব দিকেই সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা আগ্রহী উঠছে সরিষা চাষে। উপজেলার শালিখা ইউনিয়নের তালখড়ি, ধনেশ্বরগাতী, শতখালী, আড়পাড়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে যতদুর দু’ চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ।
কৃষক নির্মল বিশ্বাস জানান, গত বছর ৪একর জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম। এ বছর প্রায় ৫ একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। সঠিক পরিচর্যা করলে আশানুরুপ ভাল ফলন পাওয়া যাবে এবং লাভ হবে। ধনেশ্বরগাতী গ্রামের প্রণব কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি গত বছর সরিষা চাষ করে ভাল ফলন পয়েছি, সরিষা চাষে সময় কম লাগে বারি-১৪ সরিষা চাষ উঠতে ৭০-৮০ দিন সময় লাগে আর বেশি দানা হয় তাই ফলন বেশি পাওয়া যায়।
এ বছর আগের চেয়ে বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছি। কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার চাষ করেছি, তাই গাছ ও ফুল ফলন ভালো হবে বলে জানান। হাজরাহাটি গ্রামের চাষি মুকুন্দ বিশ্বাস জানান, আমি এ বছর নুতন সরিষা চাষে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বারি-১৪ বিজ এনে ২ একর জমিতে রোপণ করেছি এবং ভালো ফলনের আশা করছি। শ্রীহট্ট গ্রামের আমিরুল বিশ্বাস বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর সরিষা গাছ ও ফুল দেখে বোঝা যাচ্ছে এবছর দ্বিগুণ ফলন পাওয়া যাবে। বাজারে দামও পাওয়া যাবে বেশি। তাই আমন ধান কাটার পর পরই ৩ একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন, তৈল জাতীয় ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে রবি মৌসুমে প্রণোদনার কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের মাঝে বারি-১৪ ও বারি-৯ সরিষা বিজ দেয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি অফিসারগন সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা গাছ ও ফুল ভাল হওয়ায় কৃষকরা ফলন বেশি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।