কল্যাণ ডেস্ক: মুমিনুল হকের অধিনায়কত্ব নিয়ে গেলো ক’দিনে কম কথা হয়নি। অধিনায়কত্বের চাপে চিড়েচ্যাপটা দশা ‘লিটল মাস্টারের’ এরই মধ্যে বিকল্প ভাবছে বিসিবি, এমন গুঞ্জনও ক্রিকেট পাড়ায় কান পাতলে শোনা যেত। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর গুলশানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় বৈঠকে বসেছিলেন টেস্ট অধিনায়ক। তারপরই গণমাধ্যমকে জানিয়ে দিলেন, অধিনায়কত্বের পদে আর থাকতে চাইছেন না তিনি।
বৈঠক থেকে বের হয়েই গণমাধ্যমকে মুমিনুল যা জানালেন তারপর সব গুঞ্জনই যেন দুয়ে দুয়ে চারে মিলে গেলো। মুমিনুল জানান, তিনি নীতিনির্ধারকদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, আপাতত আর অধিনায়কত্ব করতে চান না। অভিমান থেকেই এমন সিদ্ধান্ত কি না জানতে চাইলে বলেন, না, তেমন কিছু নয়। ব্যাটিংয়ে আরও মনোযোগ দিতেই সরে দাঁড়াচ্ছি। এছাড়া মুমিনুল আরও জানালেন, বিসিবি সভাপতি তাকে অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা বলেননি। তিনি নিজেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে নতুন করে অধিনায়কত্বের আর্মব্র্যান্ড কে পাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মুমিনুল বলেন, এ ব্যাপারে আমি কাউকে সাজেস্ট করিনি। আগামী ২ জুন বিসিবির বোর্ড মিটিং হবে। সেখানে এ ব্যাপারে ঠিক করা হবে।
এর আগে শোনা যাচ্ছিল, বোর্ড চায় মুমিনুল অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়ে ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিক। তবে অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হতো মুমিনুলকেই। শেষ পর্যন্ত সেই পথেই হাঁটলেন তিনি। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুসও মিরপুরে সোমবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অধিনায়কত্ব বাড়তি একটা চাপ অবশ্যই (মুমিনুলের জন্য)। ব্যাটিংয়ে রান না পাওয়ায় হয়তো বাকিদের অনুপ্রাণিত করতে তার সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু রান করছে না, সেটিও তার মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যাটিংয়েও একটা প্রভাব পড়তে পারে। সেই সিদ্ধান্ত নেবে কোনটা হলে ওর ভালো হয়।
অধিনায়কত্বের চাপে চিড়েচ্যাপটা মুমিনুল ভুলে গেছেন ব্যাটিংয়ের বেসিক। সবশেষ ১০ ইনিংসে মাত্র ২ বার দুই অংক ছুঁতে পেরেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কা সিরিজের তিন ইনিংসসহ শেষ সাত ইনিংসেই তিনি ছুঁতে পারেননি দুই অংক। অফফর্মে ভোগা মুমিনুলের শেষ সাত ইনিংস – ০, ৯, ২, ৫, ৬, ২, ০।
অথচ আগমনের পর প্রথম ১৪ টেস্টে মুমিনুলের গড় ছিল রীতিমতো ব্রাডম্যানীয়। ৬০ এর ওপরে গড় নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা মুমিনুলের গড় ক্রমাগত খারাপ হতে হতে নেমে গেছে ৪০ এর নিচে।
অন্যদিকে, মুমিনুলের অধীনে ১৭ ম্যাচ খেলে তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ, ড্র হয়েছে দুই টেস্ট। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে টাইগারদের দলপতি ছিলেন তিনিই।
এদিকে, নতুন অধিনায়কও ভেবে রেখেছে বিসিবি। নতুন করে টেস্টের অধিনায়কত্বে ফেরানো হতে পারে সাকিব আল হাসানকেই। জানা যায়, টেস্ট ক্রিকেটে অনীহা থাকলেও অধিনায়কত্বের ডাক উপেক্ষা করতে পারেননি সাকিব। তাই মৌন সম্মতিও দিয়েছেন টেস্টের সাবেক নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার।