হাসানুজ্জামান ঝড়ু
এমন একটা জয় খুব দরকার ছিল। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং সব বিভাগে আফগানদের উড়িয়ে বিশ্বকাপে দারুণ শুরু পেল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে ভাল হওয়ার পেছনে এ জয় বড় ভূমিকা রাখবে বলা যায়। ম্যাচ শেষে সাকিবও পরের ম্যাচগুলোয় আরও ভালো করার প্রত্যয়ের কথা বলেছেন।
এক কথায় যদি বলি বাংলাদেশ-আফগান ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে সাকিবের বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কের সাথে মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স।
এ ব্যাখায় একটু পরে আসি। ক্রিকেটে ম্যাচ টস একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আজ টস জেতার প্রয়োজন ছিল। কেননা ধর্মশালায় পরে ব্যাট করা দলের জয়ের হার বেশি। টস জিততে ভাগ্য লাগে। সাকিবের সেই ভাগ্যটা পাশে ছিল। টস জিতে যথারীতি আগে বোলিং নেন।
প্রথম ওভারে তাসকিন দারুণ শুরু করে। তবে আফগান দুই ওপেনার ৪৭ রানে জুটি গড়ে। সাকিবের অধিনায়কের যে প্রশংসা করছিলাম তা এখান থেকে শুরু। যখন দেখলো পেস দিয়ে আফগান ব্যাটারদের কিছু করা যাচ্ছে না। তখনই নিজে বল হাতে নেন। দীর্ঘদিন পর প্রথম পাওয়ার প্লেতে বোলিং করতে আসেন। এসে প্রথম ব্রেক থ্রু দেন। উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে তার ফিল্ডিং সাজানোর কারিশমার কথা বলতে হয়। শট কাভারে একজন ফিল্ডার রেখে আফগান ব্যাটারদের ক্রিজে আটকে রাখেন। আর রান করতে না পেরে তারা সুইপ শটের দিকে যায়। তাতে ভুল করেন আফগান দুই ব্যাটার রহমত শাহ ও ইব্রাহিম জাদরান।
সাকিব বোলিং ব্যবহারে দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। নিজে উইকেট পেলেও নিজেকে বোলিং থেকে সরিয়ে নেন। আবার যখন প্রয়োজন হয়েছে তখনই বল হাতে নিয়েছেন। বোলিং চেঞ্জে দারুণ দক্ষতা দেখিয়েছেন। আফগানিস্তান ১১২/২ উইকেট থেকে ১২৬/৬ উইকেট দলে পরিণত হয়। এ চার উইকেট ভিন্ন চার বোলার নিয়েছেন।
সাকিবের সাথে মিরাজ দারুণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেছেন। বল হাতে প্রথম ওভারে নয় রান দিলেও ভালভাবে ফিরে আসে। পরের ৫ ওভারের মধ্যে ২টিতে ছিল মেডেন। একটি আবার উইকেট মেডেন। উইকেটটি আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদির। শেষ পর্যন্ত মিরাজ ৯ ওভার বল করেন। ৫৪ বলের ৩৮টিই ছিল ডট বল।
এছাড়া পেসাররা প্রথম দিকে উইকেট না পেলে শেষ দিকে পেয়েছেন। যা আফগানিস্তানকে ১৫৬ রানে গুটিয়ে দিতে সহজ হয়।
১৫৭ টার্গেটে জয় নিয়ে কোন সংশয় ছিল না। ২৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর কিছুটা অস্বস্তির ছিল। তবে মিরাজ আর শান্তর ৯৭ রানের জুটি তা মুছে দেন। দুজনই পরিস্থিতির বিবেচনা ভাল ব্যাটিং করেছেন। শান্ত প্রথম ৬০ বলের কোন বাউন্ডারি মারেননি। এক দুই করে রান নিয়ে এগিয়ে নিয়েছেন। বলা যায় শান্ত বিশ্বকাপের জন্য ব্যাটিং প্রস্তুতিটা ভালো ভাবে সেরেছেন। সাকিব শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকলে আরও ভাল হতো।
স্কোর বোর্ডে যেহেতু খুব বেশি রানের চাপ ছিল না। তাই লিটনের উচিত ছিল ক্রিজে থাকা। আর কিছুটা সময় ক্রিজে থাকলে মঙ্গলবার এই মাঠে আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামতে পারতো।