এম আর মাসুদ, ঝিকরগাছা
যশোর জেলার ব্র্যান্ডিং ফুলের চাষকে সম্প্রসারণ ও বিপণনের প্রত্যাশার মাধ্যমে ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালী-পানিসারা-হাড়িয়া মোড়ে ফুল উৎসব সমাপ্ত হয়েছে। শনিবার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) ডাক্তার নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, দেশে ৭০ ভাগ ফুল এই অঞ্চলে উৎপাদিত হয়। ফুল হলো যশোর জেলা ব্র্যান্ডিং। তাই ফুলচাষকে সম্প্রসারণ ও বিপণন বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করছে। তিনি প্রতিবছর ফুল উৎসব করার বিষয়ে প্রশাসনকে তাগিদ দেন।
সমাপনী দিনে কর্মসূচির মধ্যে ছিল উঠান বৈঠকসহ নারী নেতৃত্বে গ্রুপ ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, কৃষক সম্মাননা ও সমাপনী অনুষ্ঠান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবুল হকের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএম মামুনুর রশীদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লুবনা তাক্ষী, নাভারণ ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের আজাদ ও বীরমুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এমদাদুল হক এমদাদ।
এদিকে সমাপনী দিনেও মানুষের ঢল নামে ফুল উৎসব এলাকায়। বিশেষ করে গদখালী রেল স্টেশন এলাকা থেকে শুরু করে পানিসারায় বাংলাদেশ-আমেরিকা সৌহার্দ্য ফুল বিপণন কেন্দ্র পর্যন্ত তিলঠাঁই ছিলনা। এর আগে উৎসব উপলক্ষে ফুল ক্ষেতগুলোকে দৃষ্টিনন্দন ও পানিসারা-হাড়িয়া মোড়ে অবস্থিত রেস্টুরেন্টগুলোকেও ফুল ক্ষেতের আদলে রূপ দেয়া স্থানগুলোও দর্শনার্থীতে ঠাঁসা ছিল।
ফুলের বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ফুল রাজ্যকে সবার সামনে তুলে ধরতে গত বৃহস্পতিবার এ ফুল উৎসব শুরু হয়েছিল। উৎসব প্রাঙ্গণে বৃহত্তর কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনীও করা হয়।
এদিকে ফুল উৎসব ঘিরে বসে মেলা। এতে হস্তশিল্প ও বাহারি খাবারের পসরার দোকানগুলোও ছিল খরিদ্দারে সরগরম। হস্তশিল্পের পসরা বিক্রেতা মেঘনা এমদাদ বলেন, ফুল উৎসবে আমাদের হস্তশিল্পের পণ্য ব্যাপকহারে বিক্রি হয়েছে।
পিঠা-পুলির দোকানি নাসরিন নাহার আশা বলেন, ফুলের সাথে পিঠা-পুলির সম্পর্ক রয়েছে যশোর জেলার। তাই দর্শনার্থীরা ফুলের মেলায় এসে পিঠা-পুলি খেতে ভুল করেননি।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, ফুলের বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ফুলরাজ্যকে সবার সামনে তুলে ধরতে এ আয়োজন করা হয়। এতে ব্যাপক সাড়া পড়ায় প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে এই উৎসব করার চিন্তাভাবনা করবে উপজেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ফুলের রাজধানীতে ফুল উৎসবে লোকে লোকারণ্য