সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মনিরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত। এছাড়া ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদ-াদেশ দেয়া হয়েছে। রোববার সাতক্ষীরার জনাকীর্ণ আদালতে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন অতিরিক্ত দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক মাসুম বিল্লাহ। যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি মনিরুল ইসলাম (৩৫) কালিগঞ্জ উপজেলার ভদ্রখালী গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আসামি মনিরুল ইসলামের সাথে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী গ্রামের সাবিকুন্নাহার ওরফে সাবিনার ২০০৮ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে রিয়াদ (২) ও মারিয়া ইয়াসমিন সাইমা (৭) নামের দুটি সন্তান জন্ম হয়। পারিবারিক কলহের জের ধরে আসামী মনিরুল প্রায়ই তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। একপর্যায়ে ২০১৩ সালের সালের ১৫ জুলাই ভোর রাত সাড়ে ৪ টার দিকে সেহেরি খাওয়ার সময় আসামী মনিরুল সাতক্ষীরা শহরের কামাননগরের জনৈক করিমুন্নেছার ভাড়া বাড়ির চতুর্থ তলায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে স্ত্রী সাবিনার মাথা, শরীর ও মুখের বিভিন্ন স্থানে কাঠের মুগুর দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তার ডাকচিৎকারে বাড়ির মালিকসহ অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা দরজা খুলতে বললেও ঘাতক মনিরুল দরজা না খুলে ভিতরে অবস্থান করে।
এরপর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হয়ে মারা যায় সাবিনা। কোন উপায় না পেয়ে স্থানীয়রা ঘরের বাইরের দিক থেকে দরজা লাগিয়ে পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাবিনার মরদেহ উদ্ধারসহ ঘাতক মনিরুলকে গ্রেপ্তার করেন। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহত সাবিনার মা আঞ্জুয়ারা খাতুন বাদী হয়ে ঘাতক জামাতা মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত মনিরুল ১৬৪ ধারায় মাজিস্ট্রেটের সামনে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন। এ মামলায় ৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রোববার সাতক্ষীরার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক মাসুম বিল¬াহ আসামি মনিরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদ-াদেশ দেন। মামলায় আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন, অ্যাড. আব্দুল মজিদ। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আব্দুল বারী।