সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে ভোট না হওয়ার জেরে শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার দুপুরে রবি ও জাহিদ গ্রুপের শ্রমিকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ বাঁধে। এতে কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছে। এ সময় ভাংচুর করা হয়েছে দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকা অফিসের সাইন বোর্ড ও অফিসের থাইগ্লাসসহ নিচতলার একটি দোকানের আসবাব পত্র। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩ ঘন্টা বন্ধ ছিল জেলার ৬টা রুটে বাস চলাচল। আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক জানান, শ্রমিক ইউনয়নের এই দুই গ্রুপের মধ্যে রবি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ। অপরদিকে জাহিদ গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সাইফুল করিম সাবু। শনিবার বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে আবু আহমেদ সমর্থিত শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শেখ রবিউল ইসলাম ভোটার তালিকাসহ আগের কমিটির বিভিন্ন স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন। সেই প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট নির্বাচনে তিন মাসের স্থাগিতাদেশ দেন। এ নিয়ে বাসটার্মিনালে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এর আগে গত শুক্রবার রাতেও শ্রমিকদের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
সাবু সমর্থিত শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান জানান, রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বাস টার্মিনালের ভেতরে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে আবু আহমেদ সমর্থিত রবি গ্রুপের লোকজন সাধারণ শ্রমিকদের উপর অতর্কিত হামলা চালালে টিপু, আক্তার, সুজন ও সুমনসহ ৪ জন আহত হন। পরে তার গ্রুপের শ্রমিরা সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করে চলাচল বন্ধ করে দেন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এদিকে, আবু আহমেদ সমর্থিত শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শেখ রবিউল ইসলাম জানান, হাইকোর্টে নির্বাচন স্থগিতাদেশ দেয়া আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের লোকজনকে তারা যেখানে-সেখানে মারছে, অথচ প্রশাসন কেউ কিছু করছেনা। তিনি এ সময় তার গ্রুপের রতন, মাসুম ও মিলনসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও জানান।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবির জানান, বাস টার্মিনালের পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাস চলাচল শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ এখনো থানায় কোন অভিযোগ করেননি। দুই গ্রুপের হামলা পাল্টা হামলার ঘটনায় উভয় পক্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন।