নিজস্ব প্রতিবেদক
৯ বছর পর যশোরে বিএনপিকর্মীকে অপহরণের পর হত্যার হুমকি ও ছয় লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি সিকদার আক্কাস আলী, পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার শহরের শংকরপুর ইসহাক সড়কের বিএনপিকর্মী আশহাবুল ইসলামের স্ত্রী পারভীন ইসলাম এই মামলাটি করেছেন।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া মামলাটি আমলে নিয়ে কোতোয়ালি থানায় ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুজ। অন্য আসামিরা হলেন, কোতোয়ালি থানার তৎকালীন এসআই শোয়েব উদ্দিন, এসআই জামাল হোসেন, এসআই মিরাজ মোসাদ্দেক, শংকরপুর ইসহাক সড়কের শাহাদতের ছেলে জাহাঙ্গির হোসেন ও ইনতাজের ছেলে আলমগীর হোসেন।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার স্বামী আশহাবুল ইসলাম বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। ২০১৫ সালের ৬ মে মধ্যরাতে পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় তার স্বামী আশহাবুলকে কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে আটক করে নিয়ে যায়। তার স্বামীকে নিয়ে অজ্ঞাতস্থানে আটকে রাখে। পরের দিন সকালে বাদী কোতোয়ালি থানায় গিয়ে ওসির কাছে তার স্বামী কোথায় জানতে চান। কিন্তু উত্তরে ওসি জানায় তারা জানেন না। বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দপ্তরে গিয়েও তার স্বামীর সন্ধান পাননি। এরমাঝে ৮ মে দুপুরে ওই এলাকার বাসিন্দা তৎকালি পৌরসভার কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা, জাহাঙ্গীর ও আলমগীর তার বাড়িতে যান। তারা জানায় আশহাবুলকে ফিরে পেতে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। অন্যথায় নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হয়। একপর্যায় স্বামীকে ফিরে পেতে বাদী ছয় লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন। বাদী তার সোনার গহনা বিক্রি ও ধার দেনা করে ছয় লাখ টাকা নিয়ে কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফাকে সাথে নিয়ে ওসি আক্কাসের হাতে তুলে দেন। আটকের চার দিন পর ১০ মে আশহাবুলকে থানায় এনে বিস্ফোরক মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। এসব বিষয়ে মামলা করলে আশহাবুলকে চিরতরে গুমের হুমকি দেয়া হয়। এরপর থেকেই তারা নিশ্চুপ ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তিনি আদালতে এই মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি এজার হিসেবে গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।