নিজস্ব প্রতিবেদক
সামান্য বৃষ্টিতেই যশোর শহরের নীলরতন ধর সড়কে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকে। ভারী বৃষ্টিতে পানি উঠে যায় ওই সড়কের পাশে অবস্থিত মসজিদের ওযু করার স্থানে। স্লাভ ভেঙ্গে ড্রেন অকার্যকর হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
শহরের চিরুনিকল মোড়ে থাকা ডাস্টবিনের ময়লা-আবর্জনা ড্রেনে পড়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু এসব ড্রেনই নয়, যশোর পৌর এলাকার বেশিরভাগ ড্রেনের অবস্থা এরকমই। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় ময়লা-আবর্জনায় পড়ে পানি নিষ্কাশিত হতে পারছে না। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমছে। নাগরিকরা বলছেন, নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কারের বিকল্প নেই। আর যেখানে ড্রেন নষ্ট হয়ে গেছে সেটা দ্রুত মেরামত করে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করতে হবে। তবে ড্রেনের ময়লা আর্বজনা নিয়মিত পরিস্কার করা হয় বলে দাবি করেছেন পৌরসভার কর্মকর্তারা।
পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২৫২ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে। এর মধ্যে আরসিসি ড্রেন ৫৫ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার, ইটের গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত ড্রেন ৬০ দশমিক ৮০ কিলোমিটার। এছাড়া পাঁচ কিলোমিটার পাইপের ড্রেন ও ১৩০ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার কাঁচা ড্রেন রয়েছে।
সরেজমিনে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, ড্রেনগুলোয় ময়লা-আবর্জনা জমে পানি আটকে রয়েছে। কোথাও অর্ধেক, কোথাও সম্পূর্ণ ড্রেন পানিতে ভরে আছে। দেখলে মনে হয় নদীর মতো ড্রেনের নিচে পলি জমে আছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হোটেল-রেস্টুরেন্টের ময়লা ফেলা হচ্ছে ড্রেনে। পাড়া-মহল্লার ড্রেনে ময়লা আবর্জনার এমন স্তূপ জমে আছে, যা দিয়ে স্বাভাবিক গতিতে পানি অপসারিত হতে পারছে না। আবার কোন কোন এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না। এজন্য সেসব এলাকায় বৃষ্টির পানি নামতে দেরি হয়। শহরের খড়কি এলাকার শাহ আবদুল করিম সড়কের সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের প্রধান ফটকের (দক্ষিণ গেট) পাশে খড়কি মোড় পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সময় হাঁটু সমান পানি জমে থাকে।
এবিষয়ে নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের সমন্বয়কারী মাসুদুজ্জামান মিঠু বলেন, যশোরের যে উন্নয়ন করা হয় তা অপরিকল্পিত। পরিকল্পনা করে কোন উন্নয়ন করা হয় বলে আমার মনে হয় না। ইতোপূর্বে ড্রেনের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নষ্ট করা হয়েছে। ড্রেন করা হয়েছে কতটুকু মানসম্মত করা হয়েছে, কতটুকু পরিকল্পনা করে করা হয়েছে তা সন্দেহ আছে। ড্রেন করা হয়েছে কিন্তু ড্রেনে পানি যায় না। এখন এটা সময়ের দাবি জনগণের ট্যাক্সের টাকা অপরিকল্পিত ভাবে ব্যয় করা। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ দিয়ে কমিটি করে পরিকল্পনা করে ড্রেন করতে হবে। তা নাহলে যশোরের নিম্নাঞ্চলে যে জলাবন্ধতা তা দূর হবে না।
এ বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা উত্তম কুমার কুন্ডু বলেন, যশোর পৌরসভার ড্রেন নিয়মিত পরিস্কার করা হয়। শহরের একপাশ থেকে শুরু করে অন্যপাশ থেকে শেষ করা হয়। এভাবে ধারাবাহিক ভাবে পৌরসভার ড্রেন পরিস্কার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ড্রেনে যে ময়লা আবর্জনা জমে আছে, তা পৌরবাসীর সৃষ্ট সমস্যা। সেই সমস্যা সমাধানে প্রতিবছর অর্থ ব্যয় করতে হয়। পৌরবাসী যদি সচেতন হয়ে ময়লা-আবর্জনা ড্রেনে না ফেলেন, তাহলে এমন হবে না।