কল্যাণ ডেস্ক: সালফিউরিক গ্যাসের জ্বলন থেকে উদ্ভূত নীল রংয়ের আগুন (‘ব্লু ফায়ার) দেখতে ভ্রমণকারীরা ছুটে আসেন ইজেন মালভূমিতে।
ইজেন মালভূমি বা কাওয়াহ ইজেন নামে পরিচিত ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভার বান্যুয়াঙ্গি রিজেন্সি এবং বোন্ডোভোসো রিজেন্সি এর সীমানায় অবস্থিত অনেকগুলি আগ্নেয়গিরির একটি গুচ্ছ। এটি ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষস্থানীয় আগ্নেয়গিরি।
ক্যালডেরা এবং ইন্দোনেশিয়ার দর্শনীয়স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম স্থান এই আগ্নেয়গিরি।
২০ কিঃমিঃ প্রশস্ত এই সক্রিয় ক্রেটার মাউন্ট ইজেন এবং মাউন্ট মেরাপি উভয় আগ্নেয়গিরির মাঝে আড়াআড়ি ভাবে অবস্থিত। গুনুং মেরাপির পশ্চিমে ইজেন আগ্নেয়গিরি।
ইজেনের সক্রিয় গর্তের ব্যাস ৭২২ মিটার এবং পৃষ্ঠের আয়তন ০.৪১ বর্গ কিলোমিটার । ইজেনের গভীরতা ২০০ মিটার ।
হাজার বছর পূর্বে বিশাল এক বিস্ফোরণের তৈরি হয়েছিল নয়নাভিরাম এই আগ্নেয়গিরি। ইজেন একটি শান্ত তবে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। এই আগ্নেয়গিরিতে সর্বশেষ ম্যাগমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল ১৮৭১ সালে।
এই বিস্ফোরণের ফলে ইজেন আগ্নেয়গিরির কেন্দ্রে অবস্থিত হ্রদের পানি ও কাদামাটি ছিটকে বাইরে এসে পরে। ফলে আশেপাশের অনেকগুলি গ্রাম ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
১৮৭১ সালের পর থেকে কেবলমাত্র ফ্রিয়াটিক বিস্ফোরণ বা স্ট্রিম বিস্ফোরণ ঘটেছে। যদিও ১৯৯৯ সালে,হ্রদের রঙ কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছিল এবং অল্প সময়ের জন্য বুদবুদ দেখা যায় কিন্তু কোনও বিস্ফোরণ ঘটেনি।
ইজেন আগ্নেয়গিরির কেন্দ্রে অবস্থিত এক কিলোমিটার প্রশস্ত সুন্দর ফিরোজা রঙের সালফার হ্রদটি বিশ্বের বৃহত্তম অ্যাসিডিক হ্রদ। শুধুমাত্র অ্যাসিডিক এই হ্রদ ইজেনকে বিখ্যাত করে তুলেছে।
এখানে আছে ইজেন ব্লু ফায়ার নামে পরিচিত নীল শিখা, সালফিউরিক গ্যাসের জ্বলন থেকে উদ্ভূত হয় নীল রংয়ের আগুন দেখার জন্য ভ্রমণকারীরা এখানে ছুটে আসেন। এটি বিশ্বের বৃহত্তম নীল শিখার অঞ্চল এবং স্থানীয় লোকজন এটিকে ‘ব্লু ফায়ার’ হিসাবে উল্লেখ করেন।
এই গ্যাস আগ্নেয়গিরির ফাটল থেকে উচ্চ চাপে এবং 1,112 ° F বা 600 ° C তাপমাত্রায় বাইরে বেরিয়ে আসে এবং বাতাসের সংস্পর্শে এসে নীল রংয়ের শিখা উৎপন্ন করে।
ইজেন নীল শিখা ১৬ ফুট (৫ মিটার) পর্যন্ত উঁচুতে পৌঁছতে পারে। এই শিখা হলুদ রংয়ের সালফারের মেঘের ভিতর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে।
এই নীল শিখা দেখতে হলে সালফার গ্যাসের মেঘের মধ্যে চলে যেতে হবে।
সালফার গ্যাসের মেঘ প্রবল বাতাসে চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। যারা হাইকিং করতে আসে তারা গ্যাসের মুখোশ ব্যবহার করে তা সত্ত্বেও সালফার গ্যাস মুখোশের ভিতরে ঢুকে পরে তখন কাশি শুরু হয় এবং চোখ দিয়ে পানি বের হয়। মোটকথা এই নীল শিখার অপরুপ সৌন্দর্য্য দেখতে হলে আপনাকে বেশ কস্ট স্বীকার করতে হবে।