নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর জিলা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ফারদিন হোসেন রওনক কনোরার ফাইজারের প্রথম ডোজ দিয়েছিলেন ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর। নিয়ম অনুযায়ী ৫৬ দিন পর গত ২ জানুয়ারি তার দ্বিতীয় ডোজ দেবার কথা। কিন্তু তার বাবা আবুল হোসেন টিকা দেবার জন্য মেসেজ নিতে সিভিল সার্জন অফিসে গেলে সেখান বলা হয়- সিরিঞ্জ সংকটের কারণে শিশুদের করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেবার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
যশোর ইনস্টিটিউট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র আলিফ আহমদের অভিভাবক দ্বিতীয় ডোজ দেবার জন্য যোগাযোগ করলে তাকেও একই কথা বলা হয় সিভিল সার্জন অফিসটি থেকে।
যশোর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিরিঞ্জ সংকটের কারণে গত দুই মাস ধরে শিশুদের করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। কনোরার ফাইজারের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছিল ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর। ২ হাজার ৩৭৪টি স্কুলের ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯১৮ জন শিক্ষার্থীকে টিকার প্রথম ডোজ দেবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। টিকা প্রদান করা হয়েছে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৩২ জনকে। বর্তমানে টিকার দ্বিতীয় ডোজ টিকা রয়েছে ৩৮ হাজার। একটি ডোজে ১০ জনকে টিকা দেয়া হয়ে থাকে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেবার নির্ধারিত তারিখ ছিল গত ২ জানুয়ারি। কিন্তু সিরিঞ্জ না থাকায় দ্বিতীয় ডোজ টিকা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
জিলা স্কুলের ছাত্র ফারদিন হোসেন রওনকের পিতা আবুল হোসেন জানান, তার ছেলের চোখে ক্রিকেট ব্যাটের আঘাত লেগেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিতে হবে। কিন্ত ছেলেকে করোনার দ্বিতীয় ডোজ দিতে না পারায় ইমিগ্রেশন থেকে ভারতে যাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছি। টিকার মেসেজ করতে এসে জেনেছি সিরিঞ্জ না থাকায় টিকা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
শহরের বেজপাড়ার মেইন রোডের সুলতান আহমদ জানান, তার ছেলে আলভি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। প্রথম ডোজ টিকা নিলেও দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারেনি। কি কারণে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হচ্ছেনা তা বলতে পারছিনা। তবে নির্ধারিত সময়ের পরে টিকা নিলে কিছু হয় কিনা তা চিন্তিত রয়েছি।
যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়েব হোসেন বলেন, গত জানুয়ারি মাসে আমাদের ছাত্রদের করোনার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছিল। এরপর দ্বিতীয় ডোজ নির্ধারিত সময়ে দেয়া হয়নি। কিছু অভিভাবক এসে জিজ্ঞাসা করছে।
যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক রাসেল বলেন, ঢাকার ইপিআই থেকে আমাদের সিরিঞ্জ সরবরাহ করা হেয় থাকে। কিন্তু সেখান থেকে বরাদ্দ না আসায় শিশুদের করোনার দ্বিতীয় ডোজ আপাতত দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আশা করছি শিগগিরই সিরিঞ্জ চলে আসবে। তখন নিবন্ধিত সব শিক্ষার্থীকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হবে।
যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, সিরিঞ্জগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। শুনেছি সিরিঞ্জের চালান চট্রগাম বন্দরের পথে। চলে আসলেই আমরা টিকা কার্যক্রম শুরু করব।
আরও পড়ুন:উদীচী হামলার বিচার না হওয়ায় দেশে একের পর এক জঙ্গি হামলা হয়েছে
২ Comments
Pingback: বিশ্ব দন্ত দিবসেও মেলেনি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা - দৈনিক কল্যাণ
Pingback: গুলিস্তানে বিআরটিসি কাউন্টারের পাশে বিস্ফোরণে নিহত ৮