আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সুদানের আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) উত্তর কর্ডোফান রাজ্যের গ্রামে গ্রামে অভিযান চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সুদানে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা আইনজীবীদের একটি দল। তাদের আরও অভিযোগ, বিশেষ অভিযানে গর্ভবতী নারী ও শিশুসহ প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা করেছে আরএসএফ।
সোমবার (১৪ জুলাই) আইনজীবীদের বিবৃতিটি দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে আরএসএফ এবং সুদানের সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের সময় এসেছে। ২০২৩ সাল থেকে উভয় পক্ষ গৃহযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী দেশের মধ্য এবং পূর্বের দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, অন্যদিকে আরএসএফ উত্তর কর্ডোফান এবং দারফুরসহ পশ্চিমাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ সুসংহত করার চেষ্টা করছে।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আরএসএফ শনিবার তাদের নিয়ন্ত্রিত বারা শহরের আশেপাশে বেশ কয়েকটি গ্রামে আক্রমণ করেছে। গ্রুপটি জানিয়েছে, শাগ আলনম নামে একটি গ্রামে “ভয়াবহ গণহত্যায়” ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের হয় ঘরের ভেতরে পুড়িয়ে মারা হয়েছে অথবা গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে হত্যা করা হয়েছে আরও ৩৮ জন বেসামরিক নাগরিককে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে কয়েক ডজন মানুষ।
পরদিন, আরএসএফ হিলাত হামিদ গ্রামে “আরেকটি গণহত্যা” চালায়, যেখানে গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুসহ কমপক্ষে ৪৬ জন নিহত হয়। আইনজীবীরা বলেছেন, গ্রামগুলো সামরিক লক্ষ্যবস্তু থেকে সম্পূর্ণরূপে বাইরে ছিল। এসব স্থানে হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে পরিচালিত হয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) রোববার জানিয়েছে, এই অঞ্চলে তীব্র লড়াইয়ের ফলে তিন হাজারের বেশি মানুষ শাগ আলনম এবং আল-কোর্দি গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
আরএসএফ সেনারা দেশজুড়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলোতে ধারাবাহিকভাবে সহিংস লুটপাট চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বাহিনীটিকে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার জন্য অভিযুক্তও করেছে।
সুদানের গৃহযুদ্ধ তৈরি করেছে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট, যার ফলে অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা ক্ষুধার মধ্যে পড়েছে এবং দেশজুড়ে কলেরাসহ ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন রোগ। সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ।