চুড়ামনকাটি (যশোর) প্রতিনিধি
সুদে টাকা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির এক যুবক। বর্তমানে যুবকের ঠাঁই হয়েছে জেলখানায়। স্বামী জেলখানায় যাওয়ার পর সন্তান নিয়ে পথে পথে ঘুরছে তার দ্বিতীয় সন্তান সম্ভবা স্ত্রী।
ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চুড়ামনকাটি নুর মসজিদের পাশে মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে দিনমুজুর আবুল কাশেমের সাথে বন্ধুত্ব সর্ম্পক গড়ে ওঠে একই ইউনিয়নের ঝাউদিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে জাহিদের সাথে। বন্ধুত্বের সূত্রধরে তারা এক অপরের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। কাশেমের বৃদ্ধ মা জানান, হঠাৎ করে জাহিদ একদিন বলে তার ছেলে কাশেম তার নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছে। তিনি আরো জানান, টাকা নেওয়ার সময় সুচতুর জাহিদ আমার ছেলে কাশেমের নিকট থেকে একটি সাদা স্ট্যাম্প ও চেক বইতে স্বাক্ষর করে নেন। কাশেম টাকা দিতে না পারায় জাহিদ স্ট্যাম্পে ১২ লক্ষ টাকা বসিয়ে তার নামে একটি চেক ডিজঅনার মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর সেসময় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না’র মাধ্যমে স্থানীয় পরিষদে কয়েক দফা শালিস হলেও জাহিদ টাকা পাওয়ার কোন সঠিক প্রমাণ দেখাতে পারিনি বলে কাশেমের স্ত্রী জানান।
এরপরও গোপনে মামলা চালিয়ে যান জাহিদ। মামলায় গত ১৮ এপ্রিল কাশেমের এক বছরের জেল দেন আদালত। এছাড়াও সমুদয় ১২ লক্ষ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এই মামলায় আটক হয়ে কারাভোগ করছেন দিনমুজুর কাশেম।
এদিকে মামলার কপি ও চেকে টাকার অংক দুই রকম লেখা রয়েছে। চেক বইতে অংকে ১২ কোটি ও কথায় লেখা আছে ১২ লক্ষ টাকা। এছাড়া মামলার মূল কপিতে করা হয়েছে একই ভুল। মামলার কপি ও চেক বইয়ে রয়েছে টাকার অংকে ব্যাপক গড় মিল।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী জাহিদ জানান, কাশেম তার নিকট জমি বিক্রির কথা বলে নগদে ১২ লক্ষ টাকা গ্রহন করে। পরে জমি না লিখে দিতে চাইলে আমি আমার টাকা ফেরত চাইলে সে তালবাহানা শুরু করে। আমি সত্যি ঘটনায় মামলা দায়ের করি। চেক বই ও মামলার কপিতে টাকার অংক দুই রকম লেখার ব্যাপারে জাহিদ বলেন, মামলা লেখার সময় টাইপে ভুল হয়েছে। এছাড়া চেক বইতে অংকে লেখার সময় ভুলবশত একটি সংখ্যা বেশি লেখা হয়ে গেছে।
এব্যাপারে চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না বলেন, জাহিদ ও কাশেমের মধ্যে টাকা নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব ছিলো। আমি উভয় পক্ষকে কয়েকদফা নিয়ে শালিসে বসে সঠিক প্রমাণ না দেখাতে পারায় শালিস করিনি। এব্যাপারে কাশেমের মুক্তির জন্য তার বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী বিষয়টি যশোর জেলা প্রশাসকের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
