বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি
সুন্দরবনের গহিনে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকা বাঘটিকে উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। বন বিভাগ ও ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তাদের ধারণা, বাঘটি দুদিন আগে অর্থাৎ গত রোববার মারা গেছে। বার্ধক্যের কারণেই বাঘটি মারা গেছে বলে মনে করেন তাঁরা।
গত সোমবার সকালে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রের বনরক্ষীরা টহলের সময় টাইগার পয়েন্ট খালের ভেতরে মৃত বাঘটি পড়ে থাকতে দেখেন। পরে বাঘটিকে উদ্ধার করে আনার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শরণখোলা রেঞ্জের ডুমুরিয়া প্যাট্রোল পোস্ট (ফাঁড়ি) এলাকায় বাঘটির ময়নাতদন্ত করেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের দুজন চিকিৎসক।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, বাঘটি পুরুষ। বাঘটির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। বয়স আনুমানিক ১৫ বছর। বাঘটির দৈর্ঘ্য লেজসহ ৯ ফুট এবং উচ্চতা ৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। ওজন ২৫৫ কেজি।
এসিএফের মতো ময়নাতদন্তকারী ভেটেরিনারি সার্জনেরও ভাষ্য, পুরুষ বাঘটির বার্ধক্যের কারণে মৃত্যু হতে পারে। তারপরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফরেনসিক পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। এ জন্য বাঘের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
ভেটেরিনারি সার্জন ও শরণখোলা উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোছাহেব আহমদ বলেন, তাঁর ধারণা বাঘটি রোববার মারা গেছে। বাঘের শরীরে বাইরে থেকে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। ভেতরে পরীক্ষা করে কাটাকাটির পর দেখা গেছে সবকিছুই স্বাভাবিক। তাঁর কাছে মনে হয়েছে, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। তবু ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য বাঘের হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ ও কিডনির নমুনা সংগ্রহ করে বন বিভাগের কাছে দেওয়া হয়েছে।
ময়নাতদন্তকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাঘের মুখের কোনো দাঁত ভাঙা, পড়ে যাওয়া বা নখ ওঠা ছিল না। সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। তাঁর ধারণা, রোববার বাঘটি মারা যায়।
মারা যাওয়া বাঘটির মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। এ জন্য ময়নাতদন্তের পর বাঘের মৃতদেহ সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।
খুলনা বিভাগীয় বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, বাঘটির দেহাবশেষ বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হবে। সুন্দরবনের করমজল কেন্দ্রে ইন্টারপ্রিটেশন ও ইনফরমেশন সেন্টার আছে। সেখানে এটি স্টাফিং করে রাখা হবে।