শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সুন্দরবনের শ্যামনগর ও কয়রায় কোস্ট গার্ডের পৃথক অভিযানে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদকদ্রব্যসহ অস্ত্র ব্যবসায়ী এবং দুর্ধর্ষ দুলাভাই বাহিনীর এক সক্রিয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
কোস্ট গার্ড সূত্র জানায়, নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে কোস্টগার্ড কৈখালীর ভেটখালী বাজারসংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া করে আটক করা হয় মানবপাচারকারী ও ভারতীয় অস্ত্র-মাদক চোরাচালানকারী মামুন কয়ালকে। তার কাছ থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে মামুনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে শ্যামনগর থানার বয়াসিং এলাকার একটি খালের পাশে পুঁতে রাখা একটি বিদেশি ৯ এমএম পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান এবং ৮ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি বিজিবির সহায়তায় তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল জব্দ করে কোস্টগার্ড।
অন্যদিকে, গত শনিবার (৮ নভেম্বর) গভীর রাতে সুন্দরবনের খাশিটানা খালসংলগ্ন এলাকায় দুলাভাই বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালায় কোস্টগার্ড বেইস মোংলা ও স্টেশন কয়রার সদস্যরা। এ সময় ডাকাত সদস্যরা কোস্টগার্ডকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়েন কোস্টগার্ড সদস্যরা। পরে দুলাভাই বাহিনীর সদস্যরা রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়।
ঘটনার সূত্র ধরে কয়রা থানা এলাকা থেকে দুলাভাই বাহিনীর সদস্য মো. সোলায়মানকে আটক করে কোস্টগার্ড। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরে কয়রা এলাকায় পুনরায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় একটি একনলা বন্দুক, ১০ রাউন্ড তাজা গুলি, ২৬ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজ, ৪৪টি চকলেট বোমা, ৩০টি মোবাইল ফোন, একটি বাইনোকুলার, একটি ওয়াকিটকি, চারটি দেশীয় অস্ত্র ও ২০ গ্রাম গাঁজাসহ বিভিন্ন ডাকাতি সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোলায়মান স্বীকার করেন যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দুলাভাই বাহিনীর হয়ে কাজ করছেন এবং দলটিকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহ করে আসছিলেন।
কোস্টগার্ড জানায়, আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত রাখতে কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সুন্দরবনকে সম্পূর্ণ দস্যুমুক্ত রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
