শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিবেদক
বাবা পাঁচ দিন আগে সুন্দরবনে গিয়েছিলেন মাছ শিকারে। বাড়ি ফিরে জানতে পারেন কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ছেলে। তাকে খুঁজতে লোকজন নিয়ে সুন্দরবনে যান বাবা। গিয়ে দেখেন মানুষের মাথা মুখে নিয়ে বসে আছে একটি বাঘ। পরে বাঘ তাড়িয়ে সেই মাথা উদ্ধার করা হয়।
রোববার (১ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন থেকে ক্ষতবিক্ষত ওই মাথাসহ ছেলের পরনের কাপড়চোপড় উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত জেলে ২২ বছরের শিপার হাওলাদার শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের ফারুক হাওলাদারের ছেলে। গত বুধবার পূর্ব সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন তিনি।
পরিবারের বরাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেন তালুকদার বলেন, শিপার গত বুধবার ভোলানদী পাড় হয়ে কাঁকড়া ধরতে একা সুন্দরবনে প্রবেশ করে। তার আগের দিন শিপারের বাবা ফারুক হাওলাদার বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশন অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যান।
গতকাল শনিবার ফারুক বাড়ি ফিরে জানতে পারেন তার ছেলে শিপার চার দিন ধরে নিখোঁজ। পরে বাড়ির কাছাকাছি সুন্দরবনে খোঁজাখুঁজি করেও ছেলের সন্ধান না পেয়ে এলাকাবাসীকে জানান তিনি।
ইউপি সদস্য জানান, আজ রোববার সকালে ফারুকের নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন লোক যান সুন্দরবনে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তারা তুলাতলা খাল এলাকায় একটি বাঘকে মানুষের মাথা নিয়ে বসে থাকতে দেখেন। এ সময় এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে বাঘটি তাড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত মাথাটি উদ্ধার করে। মাথাটি শিপারের মাথা চিহ্নিত করে গহিন বনে তল্লাশি করে শিপারের পরনের কাপড়চোপড়ও উদ্ধার করেন তারা। এলাকাবাসীর ধারণা, বাঘ আগেই শিপারের সম্পূর্ণ দেহ খেয়ে ফেলেছে।
বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘শিপারের বাড়ি সুন্দরবনসংলগ্ন হওয়ায় তিনি বন বিভাগের অনুমতি না নিয়েই একা বনে প্রবেশ করেছেন। সকালে এলাকাবাসী খোঁজাখুঁজি করে তার মাথা উদ্ধার করে নিয়ে আসার পর আমরা ঘটনাটি জানতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোলা নদী মরে যাওয়ার কারণে এ পথে রাতে এলাকাবাসী অনেকেই বন বিভাগের অনুমতি না নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন।’