নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের জামাই সুশান্ত কুমার ধর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শ^শুর-শাশুড়ি এবং তার স্ত্রী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণের পরে বিচারক বিশেষ দায়রা জজ ও বিশেষ জজ জেলা ও দায়রা জজ এসএম নুরুল ইসলাম তাদের জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।
আত্মসমর্পণকৃতরা হলেন, যশোর শহরতলীর বিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও নিহতের শ্বশুর সন্যাসী কুমার বিশ্বাস, শাশুড়ি করুনা রাণী ও স্ত্রী ইতি রাণী। উল্লেখ্য ২২ বছর পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের অনুপস্থিতিতে তিনজনকেই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন একই আদালতের বিচারক।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০০ সালে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের কৃষ্ণপদ ধরের ছেলে সুশান্ত কুমার ধর পারিপারিক ভাবে যশোর শহরতলীর বিরামপুরের সন্যাসী কুমার ধরের মেয়ে ইতি রাণীকে বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েক দিন যেতে না যেতেই শ্বশুর-শাশুড়ি তার মেয়ে ইতিকে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসতে বলে। এ নিয়ে ইতি তার স্বামীর সংসারে চরম অশান্তি শুরু করে। এরপরে ২০০২ সালের অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে ইতি তার বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে। সুশান্ত পূজা উপলক্ষে ১২ অক্টোবর শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে আসেন। ওইদিন রাতে শ্বশুরের কাছে শহরের দোকান কিনতে দেয়া চার লাখ টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে কলহের সৃষ্টি হয়। ভোর রাতে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে সুশান্তকে গলাকেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই নারায়ন কুমার ধর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে ১৫ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১০ জুলাই চারজনকে অভিযুক্ত ও তিনজনের অব্যাহতি চেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর সার্কেলের এএসপি জিল¬ুল ইমান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক নিহতের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন। তবে রায় প্রদানকালে পলাতক থাকায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাজারির আদেশ দেন বিচারক। ফলে পুলিশি গ্রেপ্তারের হয়রানি এড়াতে গতকাল ২০ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।