এম এ রাজা
যশোর প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সূচিতে বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। অংশগ্রহণকারী দলের অনেকের ভাষ্য, যে কোনো অজুহাতে খেলা পিছিয়ে দিচ্ছে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট পরিষদ। ২২ জানুয়ারি লিগ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার সূচিতে পরিবর্তন এসেছে। সর্বশেষ সুপার ফোর পর্বের দুই ম্যাচ পর মঙ্গলবার বৃষ্টির কারণে খেলা স্থগিত করা হয়। মাঠ খেলার উপযোগী না হওয়ায় বৃহস্পতিবারের খেলাও স্থগিত করা হয়েছে। কবে আবার লিগ শুরু হবে তার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি ক্রিকেট পরিষদের সম্পাদক সোহেল মাসুদ হাসান টিটো। মাঠ খেলা উপযোগী করা চেষ্টা করেছি কিন্তু পারেনি। মাঠ খেলার উপযোগী না হলেও তো কিছুই করার নেই বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, এটা কোন টুর্নামেন্ট না। টুর্নামেন্ট হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে শেষ করে দেয়া যায়। এটা তো লিগ।
এর আগেও বিভিন্ন সময় অনেকবার খেলা স্থগিত করেছে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। তাই ১৯২ দিন পার হলেও মাত্র ৩২টি ম্যাচ শেষ করতে পেরেছে। এখনো সুপার ফোরের চারটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। কবে তা হবে তা কেউ সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি। তবে ৪/৫ তারিখ শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত স্টেডিয়ামে। তাতে ৬ আগস্টের আগে খেলা শুরু করার কোন সম্ভাবনা নেই। এর আগে লিগের খেলা বন্ধ রেখে মাস্টার্স কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করায় সমালোচনার মুখে পড়ে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
বারবার খেলা বন্ধ হওয়ায় আসাদ ক্রিকেট একাডেমির অধিনায়ক আরাফ তানভীর ভীষণ ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, লিগের শুরুতে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সূচি দেখে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। কিন্তু হুট করে সূচিতে পরিবর্তন আসলে খেলোয়াড়দের মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে। যার প্রভাব পড়ে খেলায়।
তিনি আরও বলেন, খেলা বন্ধ থাকলে ক্লাবগুলো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বারবার খেলা পেছানোর কারণে লিগের সময়সীমা বেড়ে যাচ্ছে। তাই ক্লাবগুলোর ব্যয়ভারও বেড়ে যাচ্ছে। পারিশ্রমিক ছাড়াও, একজন খেলোয়াড়ের পেছনে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয় ক্লাবগুলোকে।
যশোর ক্রিকেট ক্লাবের খেলোয়াড় কাম ম্যানেজার সাজিদ হাসান পলাশ বলেন, একটা লিগ শুরু করলে তা একবারে শেষ করলে তো ভাল হয়। কেননা বারবার পরিবর্তন হলে খেলোয়াড়দের অর্গানাইজ করা কষ্ট হয়। এ ব্যাপাওে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। অবশ্য আমাদের মাঠের অবস্থা এমন যে চাইলেও অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জেলা কোচ আজিমুল হক বলেন, ‘বারবার সূচি পরিবর্তন হলে খেলোয়াড়রা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবাই খেলার জন্য প্রিপারেশন নেই। কিন্তু খেলা না হলে মেন্টাল আপসেট হয়। যার প্রভাব পড়ে মাঠের খেলায়। যদি আপনি যশোরের লিগ দেখে থাকেন তাহলে দেখবেন কোন ব্যাটারের কাছ থেকে বড় ইনিংস বের হয়নি। খেলোয়াড় এক ম্যাচের ভুল পরের ম্যাচে সংশোধন করার চেষ্টা করে। কিন্তু যদি এক ম্যাচের পর পরের ম্যাচ জন্য দীর্ঘদিনের বিরতিতে পড়ে তাহলে কি ভুল করেছিল তা ভুলে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা একটা খেলোয়াড় টানা সাত মাস একই রকম এনার্জি থাকে না’
