যশোরে ঘর পাচ্ছেন বসুন্দিয়ার খাদিজা বেগম
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের দেয়া বাড়ি পাচ্ছেন যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া গ্রামের খাদিজা বেগম। তিনি ওই গ্রামের খানপাড়া আফরাঘাট এলাকার কাওছার আলীর স্ত্রী। সারা দেশের ৫২০ থানার মধ্যে ৪শ থানায় পুলিশ নিজেদের অর্থায়নে তৈরি করা বাড়ি গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর শুরু হয়েছে। খাদিজা বেগম এদেরই একজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গভবন থেকে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারাদেশে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ ও প্রতিটি থানায় স্থাপিত নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক এবং গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত গৃহ হস্তান্তরের উদ্বোধন করেন।
সারা দেশের ৫২০ থানায় একযোগে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপভোগ করেন পুলিশ, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
সকালে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রমুখ।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি কথা বলেন পুলিশের চট্ট্রগ্রাম বিভাগীয় অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। ওই অফিস থেকে উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুন্নাহার স্বপ্না নারী, শিশু, বয়ষ্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তথ্য দেন। এছাড়া গৃহহীন সেলিনা আক্তার প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন। তিনি ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেন। এরপর একেএকে রংপুরের পীরগঞ্জ থানা ও মাগুরা সদর থানায় উপস্থিত সুধীজনদের সাথে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন। মাগুরা সদর থানায় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন। ওই অনুষ্ঠানে ডেস্ক ইনচার্জ এসআই সাবিনা রহমান মৌলি, হেল্পডেস্কের সুবিধাভোগী টুকটুকি এবং গৃহ সুবিধাভোগী বাতিলা বেগমের মেয়ে তাহমিনা খাতুন প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ জানান নারী, শিশু বয়ষ্ক ও প্রতিবন্ধীদের কথা ও অভিযোগ শোনার জন্য সারা দেশের থানায় হেল্প ডেস্ক সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এই পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৩ হাজার ১৬৮জন এই ডেস্কের সুবিধা নিয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ৪৬৫ জনের মতো সেবা গ্রহণ করে থাকেন। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে হেলডেস্কের কার্যক্রম শুরু হয়। এছাড়া মুজিব বর্ষ উপলক্ষে এই পর্যন্ত ৪শটি ঘর তৈরি করা হয়েছে ভূমিহীন জন্য। পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর দেশের সকল কার্যক্রম থেমে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই অগ্রযাত্রা আবার শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথম আঘাত আসে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনে। সেখান থেকে পুলিশ সারাদেশে জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণার তথ্য অপারেট করে জানিয়ে দেয়। ফলে পুলিশ হতে হবে জনগণের। জনগণের সেবার মানসিকতা নিয়ে পুলিশকে কাজ করতে হবে। অন্যায়ের প্রতিকার করতে হবে। বঙ্গবন্ধু ভূমিহীনদের জন্য জমি বরাদ্দের কাজ শুরু করেছিলেন। সেই কাজ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার করছে।
তিনি জানিয়েছেন, দেশের কেউ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সকলের মাথা গোজার ঠাঁই করে দেয়া হবে। প্রত্যেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণের এই কাজ করতে হবে আওয়ামী লীগকে। পুলিশকে এই কাজে সহযোগিতা করতে হবে। বক্তব্যের শেষে তিনি দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষ ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের অগ্রীম শুভেচ্ছা জানান।
ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন, অফিসার্স ইনচার্জ তাজুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান, পরিদর্শক (অপারেশন) আলমগীর হোসেন, সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম চৌধুরী, চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আকিকুল ইসলাম, পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম, বসুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম খান রাসেল ও ব্যবসায়ী মীর মোশারফ হোসেন বাবু প্রমুখ।