নিজস্ব প্রতিবেদক: অতিমারি করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর পর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে যশোরের মূল আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা ফেরে স্বমহিমায়। ফের ঢাক-ঢোলের তালে তালে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন সব বয়সী মানুষ। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও অংশ নেন এ মঙ্গল শোভাযাত্রায়। বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হয়।
‘সংস্কৃতির রাজধানী’ যশোর শহর থেকেই ১৯৮৫ সালে প্রথম শুরু হয় বৈশাখের প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। যার ধারাবাহিকতা আজও বজায় রয়েছে। এবছরও মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে ছিল সাংস্কৃতিক ও চারুকারু সংগঠনগুলোর নানা আয়োজন।
চারুপীঠের সাধারণ সম্পাদক কাজী মামুনুর রশিদ জানান, স্বল্প সময়ের ভেতর বৈশাখ পালনের সিদ্ধান্ত হলেও আয়োজনটা বেশ বড় করেই হয়েছে। দেশে মঙ্গল শোভাযাত্রার সূচনা হয় ১৯৮৫ সালে যশোরে। চারুপীঠই মঙ্গল শোভাযাত্রার সূতিকাগার। করোনাকালের দুই বছর বাদে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবছরও বেশ জমাকালো শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। বাঘ, ঘোড়া, হাতি, পাখি, রাজা, রাণীর শত মুখোশ নিয়ে চারুপীঠ চত্বর থেকে প্রায় ২০০ জনের সুসজ্জিত মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। পরে টাউন হল মাঠে সম্মিলিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া হয়।
চারুতীর্থের সজল ব্যানার্জী জানান, মঙ্গল শোভাযাত্রাকে স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনতে অল্প সময়ের মধ্যে বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরতে নানা আকৃতির মুখোশ তৈরি করি। যা যশোরবাসীর নজর কেড়েছে। বিশেষ করে শিশুদের আনন্দ দিতে প্রয়াস চালাই।
ঐতিহ্যবাহী নাট্য সংগঠন বিবর্তন যশোর পহেলা বৈশাখে জমকালো সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পহেলা বৈশাখ পালনের সিদ্ধান্ত হওয়ায় নাটকসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গুছিয়ে উঠতে পারেনি। তবে মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়। বিবর্তনের কর্মীরা হাতি, গরুর গাড়ি, হাতপাখা, নানা মুখোশ ও পুতুল নিয়ে ঢাক পিটিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। যা যশোরবাসীর নজড় কাড়ে। সংগঠনের সভাপতি নওরোজ আলম খান চপল বলেন, বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ আমরা দীর্ঘ দু’বছর পর আবার উদযাপন করতে পেরে খুবই খুশি।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, ডিডিএলজি হোসাইন শওকতসহ উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক সুকুমার দাস, বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, হারুন অর রশীদ, ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলুসহ সাংস্কৃতিকজনেরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেন।