শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে স্বামীর মরদেহ দাফনে বিলম্ব হওয়ার কারণে তিথি নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বসতে দেয়া হয়নি পরীক্ষায়।
রোববার (৩ মার্চ) সকালে এমন ঘটনা ঘটেছে শ্যামনগর পৌরসভা সদরের নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার জোবেদা সোহরাব মডেল একাডেমী থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিথি খাতুন। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত স্বামীর দাফনের কারণে নির্ধারিত সময়ের পরে উপস্থিত হলে তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী তিথি খাতুন জানান, প্রায় আট মাস আগে খানবাহাদুর আহসানউল্লাহ কলেজের স্নাতকের ছাত্র দেবহাটা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
আগের পরীক্ষাগুলো ভালো হয়েছে উল্লেখ করে তিথি জানান, শনিবার (২ মার্চ) রাতে এক বন্ধুকে রক্ত দিতে বের হয়ে কুলিয়া এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তার স্বামী বিল্লাল হোসেনের মৃত্যু হয়। রোববার সকালে জানাযা ও দাফন শেষে শ্বশুর বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত শ্যামনগরের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছালেও তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি।
স্বামীর মৃত্যু ও দাফনের যাবতীয় বিষয়াবলী প্রমাণসহ জানানোর পরও তার কোনো কথা না শুনে পরীক্ষা কক্ষে ঢুকতে বাধা দেয়া হয় বলেও জানান এই পরীক্ষার্থী।
তিথির প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার জানান, মেয়েটি মেধাবী বলে আমি নিজেও অনুরোধ করেছিলাম তাকে পরীক্ষার সুযোগ দেয়ার জন্য। কিন্তু সে সুযোগ তাকে দেয়া হয়নি। এতে করে সদ্য স্বামী হারানো এই কিশোরীর জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়লো।
পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুষ্ণেন্দু মুখার্জী জানান, মেয়েটির এমন দুর্ঘটনার কথা জেনে সরাসরি যশোর বোর্ড কন্ট্রোলার স্যারকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু আগেই ওএমআর (অবজেকটিভ) পরীক্ষা শেষ হওয়ায় তাকে নুতন করে সেগুলো সরবরাহ সম্ভব ছিল না। এছাড়া তিথির পক্ষে ওই সময়ের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব ছিল না।