সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি
নারী উদ্যোক্তা লাভলী খাতুনের স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করা হলো না। যৌতুকলোভি স্বামীর হাতে অমানুষিক নির্যানের শিকার হয়ে দুই বছরের শিশু পুত্র নিয়ে পিতার বাড়িতে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন গৃহবধূ লাভলী খাতুন (৩৪)। লাভলী খাতুনের বিয়ের আগে ছিট কাপড়ের ব্যবসায় জমানো ১০ লাখ টাকাও কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে আনসার সদস্য স্বামী এস এম মুজাহিদ হোসেন (৫০)। এখন ব্যবসা ও স্বামী সংসার হারিয়ে কষ্টে দিন যাচ্ছে লাভলী খাতুনের।
এঘটনায় গৃহবধূ লাভলী খাতুন সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আমলী-১ আদালতে স্বামী মুজাহিদের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা শহরের বাগান বাড়ীর বাসিন্দা আব্দুল মাজেদের কন্যা লাভলী খাতুনের সাথে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর ১ লাখ টাকায় দেনমোহরে বিয়ে হয় যশোর জেলার মণিরমপুর উপজেলার কাটাখালী গ্রামের আব্দুল কাদেরের পুত্র এসএম মুজাহিদ হোসেনের। বিয়ের কিছু দিন পরই লাভলী খাতুনের ছিট কাপড় ব্যবসার মুলধন ১০ লাখ টাকা নানা কৌশলে হাতিয়ে নেয় স্বামী মুজাহিদ হোসেন। এভাবে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঘর সংসার করাকালে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয় তাদের। যার নাম এসএম মুরছালিম মোস্তাকিম। বয়স দুই বছর।
কিন্ত বিয়ের কয়েক বছর যেতে না যেতেই লাভলী খাতুনের সংসারে নেমে আসে চরম অশান্তি। স্বামী মুজাহিদ হোসেন যৌতুকের কারনে সময়-অসময়ে প্রায়ই মানষিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। কিন্ত লাভলী খাতুনের পিতা-মাতার পক্ষে যৌতুক দেয়ার মত সমর্থ না থাকায় মুখ বুঝে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করে আসছিলেন লাভলী খাতুন।
তিনি জানান, শহরের সুলতানপুর বড় বাজার এলাকায় লাভলী বস্ত্রলয় নামে তার ছিট কাপড়ের ব্যবসা ছিলো বিয়ের আগে। ব্যবসার মুলধন ছিলো ১০ লাখ টাকার উপরে। কিন্ত বিয়ের পর স্বামী নানা কৌশলে ওই ১০ লাখ টাকা নিয়ে নেয় আমার কাছ থেকে। আমিও সংসারে সুখের চিন্তা করে সরল বিশ্বাসে ব্যবসার পুরো টাকাটা তুলে দিই স্বামীর হাতে। কিন্ত যৌতুক লোভি স্বামী তাতেও মন ভরেনি। একপর্যায়ে পুনরায় আরো ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গত ২০২২ সালের ১২ আগস্ট লাভলী খাতুনকে মারধর করে এক বস্ত্রে শিশু পুত্রসহ তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। সেখান থেকে সাতক্ষীরা শহরের পিতৃলয়ে শিশু পুত্রকে সাথে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।