নিজস্ব প্রতিবেদক
চুয়াডাঙ্গায় পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। ছোট ভাইকে বিদেশ পাঠানোর জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে দাবিকৃত দুই লাখ টাকা না পাওয়ায় স্ত্রী সুলতানা পারভীনের শরীরে ফুটন্ত ভাত ঢেলে দেন স্বামী রবিউল বিশ্বাস। পাশে ছিলেন শাশুড়িও। গত সোমবার (২১ জুলাই) সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নগরবাকা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার সুলতানা বর্তমানে তিন মাসের শিশুসন্তানকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তার শরীরের প্রায় ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
সুলতানা পারভীন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর গ্রামের কলোনীপাড়ার হাসান শেখের মেয়ে। তার স্বামী রবিউল বিশ্বাস কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমবাড়ীয়া ইউনিয়নের নগরবাকা গ্রামের বাসিন্দা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুলতানা বলেন, ‘আমার দেবর বিদেশ যাবে-এই কারণে আমার স্বামী বাপের বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা আনতে বলে। আমাদের পরিবার গরিব, টাকা দিতে না চাইলে আমার ওপর ফুটন্ত ভাত ঢেলে দেয়। আমার শাশুড়িও পাশে ছিল।’
তিনি আরও জানান, ‘এটি প্রথমবার নয়-এর আগেও তাকে বারবার শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।’
সুলতানার ভাই সোহেল বলেন, ‘বিয়ের সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বহুবার যৌতুক দিয়েছি, আসবাবপত্র দিয়েছি। কিন্তু তবুও আমার বোনকে তারা নির্যাতন করত। গত তিন মাস ধরে দুই লাখ টাকা চেয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। এনজিও থেকে নিজের নামে ঋণ নিয়ে দেয়ার জন্যও চাপ দেয়া হয়। রাজি না হওয়ায় মারধর করা হয়।’
তিনি আরও জানান, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমরা শ্বশুরবাড়িতে গেলে তার স্বজনরা আমাদের ওপর চড়াও হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় সুলতানাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়ার হালসার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করি। অবস্থার অবনতি হলে বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমরা এর বিচার চাই। দ্রুতই মামলা করব।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র সার্জারি কনসালট্যান্ট ডা. এহসানুল হক তম্ময় বলেন, ‘রোগীর শরীরের প্রায় ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত কিনা, তা বলা যাবে আগামী ৭২ ঘণ্টা পর। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: যশােরে বড় ভাইয়ের হাতে ছোট বোন খুন