চুড়ামনকাটি (যশোর) প্রতিনিধি
স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামীর বসতভিটা থেকে অসহায় এক গৃহবধূকে দুই সন্তানসহ উচ্ছেদ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গৃহবধূকে মারপিট করে দুই সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন তারা। নিরুপয় হয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে গৃহবধূ শান্তা খাতুন। বর্তমানে সন্তানসহ পিতার বাড়িতে ঠাই মিলেছে শান্তা খাতুনের। সোমবার চুড়ামনকাটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নিজের উপর চালানো নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন শান্তা খাতুন।
লিখিত অভিযোগে শান্তা খাতুন বলেন, যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের নাটুয়াপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের সাথে ১৩ বছর পূর্বে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমি বুঝতে পারি আমার স্বামী একজন মানসিক ভারসাম্যহীন। আমার বড় ছেলে হাসান (১০) ও ছোট ছেলে হুসাইন (০৫)।
শান্তা খাতুন বলেন, আমার স্বামী মানসিক রোগী হওয়ায় এই সুযোগে আমার স্বামীর ভাইয়েরা, ভাবিরা, বোনেরাসহ চাচারা জোরপূর্বক জমি জোরপূর্বক দখল করে চাষাবাদ করতে থাকে। আমি প্রতিবাদ করলে তারা জোটবদ্ধ হয়ে প্রায়ই আমাকে মারপিট করে জখম করতো। আমি সন্তানদের কথা ভেবে তাদের সকল অত্যাচার সহ্য করে যায়। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ভাসুরের ছেলে ওবাইদুল ইসলাম, ভাসুর রবিউল ইসলাম রবি, কামরুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, আমার জা শাহানাজ বেগম, রেশমা বেগম, শাশুড়ি রহিমা বেগম আমাকে মারপিট করে জখম করে বাপের বাড়ি চুড়ামনকাটিতে পাঠিয়ে দেয়। আমি আমার পিতার বাড়িতে থাকা অবস্থায় ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পরে জানতে পারি আমার স্বামী বিষপান করেছে। ওই দিন রাত ১০ টার দিকে খুলনা হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আমার ধারণা স্বামীকে জোরপূর্বক আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জমির লোভে বিষপান করিয়ে হত্যা করছে। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে কৌশলে স্বামীর মৃত্যুর ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন তারা। এমনকি মানসিক রোগী দেখিয়ে ময়নাতদন্ত না করে দাফনের চেষ্টা করে। পরে পুলিশের চাপে ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থান কবর দেয়া হয়।
শান্তা খাতুন আরো বলেন, আমার শশুরবাড়ির লোকজন আমাকে আমার স্বামীর মৃতদেহটাও দেখতে দেয়নি। এমনকি ওই দিন তারা আমাকে স্বামীর ভিটায় যেতেও দেয়নি। বর্তমানে তারা আমাকে স্বামীর ভিটায় যেতে দিচ্ছে না। আমি দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে অসহায় জীবনযাপন করছি। গত ১ জানুয়ারি স্বামীর বাড়িতে গেলে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।