নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন ধরন ওমিক্রনসহ দেশের সামগ্রিক করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় নতুন করে ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। তবে বিধিনিষেধ আরোপের তৃতীয় দিনেও গণপরিবহনে বিধিনিষেধের লেশমাত্র দেখা যায়নি। সর্বত্রই দেখা গেছে উদাসীনতা। বিধিনিষেধ মানাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেই কোনো ধরনের তদারকিও।
গতকাল শনিবার যশোরের বড় বাজার, বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশনে ছিলো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। অধিকাংশ বাসে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে যাত্রীদের ঠাসাঠাসি করে ওঠানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার নীতি মানছেন না যাত্রীদের অনেকেই। মাস্ক থাকলেও তা কারও হাতে, কারওবা পকেটে। অধিকাংশ চালক ও সহকারীর মাস্ক ঠাঁই পেয়েছে থুতনিতে।
অন্যদিকে রেলস্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা মানছেন না নিরাপদ দূরত্ব। মাস্ক ব্যবহারেও রয়েছে চরম অনিহা। লোকাল ট্রেনে ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। সব থেকে ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে ট্রেনে ওঠার সময়।
যশোর রেলস্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এএসআই বদর উদ্দীন বলেন, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি যাতে যাত্রীরা মাস্ক ব্যবহার ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখে। তবে যাত্রীদের ভেতর মাস্ক পরার ব্যাপারে রয়েছে বেশ অনিহা। হ্যান্ড মাইক দিয়ে কিছু সময় পরপরই সতর্ক করা হচ্ছে।
যশোরে গত কিছুদিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে নতুন ধরন ওমিক্রন উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ১১ জানুয়ারি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।
তবে বিধি নিষেধে মাস্ক ছাড়া বের হলে জরিমানার কথা বলা থাকলেও এখন পর্যন্ত যশোরে তা কার্যকার হয়নি।
নির্দেশনা অনুযায়ী, উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখাসহ ট্রেন, বাস ও লঞ্চে আসন অনুযায়ী যাত্রী পরিবহন, সব ধরনের যানের চালক ও সহকারীদের করোনার টিকা নেয়ার সনদ সাথে রাখার কথাও বলা হয়েছে।
তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে সর্বত্র। দেখা যায়নি কোনো তদারকিও। বাসগুলো যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করছে। অধিকাংশ পরিবহনে নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক স্প্রে।
অধিকাংশ বাসে দেখা যায়, দরজায় দাঁড়িয়ে হেলপার যাত্রী ডাকছেন, টেনে তুলছেন। যাত্রীদের কারও মাস্ক থুতনিতে, কারও হাতে, কারওবা পকেটে। আবার কারও কারও মাস্কই নেই। সব সিটে যাত্রী নেয়ার পাশাপাশি দাঁড়িয়েও যাত্রী নেয়া হচ্ছে। যাত্রী ওঠানো এবং নামানোর ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, ইতিমিধ্যে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আমরা জনসাধারণকে সতর্ক ও মাস্ক বিতরণ করেছি। এখনো জরিমানা আদায় করা হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষকে মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে। তবে পরিবেশ স্বাভাবিক না হলে আমরা কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হবো। তখন শতভাগ জরিমানা ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।