দৈনিক কল্যাণে ৯ জানুয়ারি সড়কে নিয়ম-নীতিহীন যানবাহন চালানোর বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা আইনের গন্ডিতে পরিচালিত কোন দেশে চলতে পারে না। বলা হয়েছে যশোর ও নড়াইলে ৫ হাজার লাইসেন্সবিহীন চালক গাড়ি চালায় আর ৫ হাজার গাড়ির কোন ফিটনেস নেই। দুর্ঘটনার জন্য এর চেয়ে বড় কারণ আর কি থাকতে পারে? কিন্তু কে দেখবে এ অনিয়ম। সারা দেশের চিত্র এমনটাই তাতে কোন সন্দেহ নেই।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণসমূহের মধ্যে যা উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে ফিটনেস বিহীন যানবাহন ও চালকের অদক্ষতা অন্যতম।
স্বজন হারানোর বেদনা কতটুকু তা যারা এ ব্যথায় ব্যথিত তারা ছাড়া আর কেউ অনুভব করতে পারবে না। যদি স্থানীয় জনতা উত্তেজনা বশত ওই ঘাতক গাড়িগুলো ভাঙচুর করে বসতো তাহলে পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতো। ভাঙচুরের অপরাধে পুলিশ মামলা করতো এলাকার সাধারণ নিরীহ মানুষের নামে। মানুষ খুন করেও পরিবহন শ্রমিকরা শেষমেষ পার পেয়ে যেত এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে হচ্ছেও তাই। তারা জোর গলায় বলবে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য একা শ্রমিকরা দায়ি নয়। এ জন্য পথচারীরাও দায়ি। যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনার যে কারণগুলো চিহ্নিত করেছে তার প্রায় সবগুলোর জন্য চালকরা দায়ি। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই পরিবহন শ্রমিকদের কথা ঠিক হলে সারা বিশ্বের অন্যন্য দেশেও বাংলাদেশের মতো সড়ক দুর্ঘটনা হতো। কিন্তু সেটা কি হয়? ওই সব দেশের শ্রমিকদের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা আছে। আমাদের দেশে এ সব কিছুই নেই। এ কারণে ফ্রিস্টাইলে ঘটে চলেছে সব কিছু। জাপানে দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে নিহতের পরিবারের ভোরণ-পোষণ ওই পরিবহন শ্রমিককে বহন করতে হয়। এমন কঠোর আইনের মত কোনো আইন বাংলাদেশে চালু না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন শ্রমিকরা নিয়ন্ত্রণে আসবে না। ট্রেড ইউনিয়নের নামে তারা য়ে অরাজকতা সৃষ্টি করে তা কোনোক্রমেই সমর্থন যেগ্য নয়।
মাত্র এক মাসে ৫৪৭ জন প্রাণ হারাবে আরো সহ¯্রাধিক আহত হবে তা মেনে নেয়া যায় না। সারা পৃথিবীতে এ ঘটনা নজীরবিহীন। এক একটি দুর্ঘটনা ঘটে আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় অপরাধী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু সে ব্যবস্থা আর জনসাধারণ চোখে দেখে না। আমরা জানিনে আর কত প্রাণ এভাবে গেলে পরিবহন শ্রমিকরা নিয়ন্ত্রণে আসবে। বন্ধ হবে তাদের বেপরোয়া ভাব।