নিজস্ব প্রতিবেদক
ভাড়াটিয়া সেজে ইমন হোসেন (২৫) নামে এক চালককে হত্যার পর ইজিবাইক নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার তিনদিন পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে যশোরের বসুন্দিয়া এলাকার ভৈরব নদের পাড় থেকে বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার পকেটে থাকা ১৫০ টাকা, গ্যাস লাইট ও নিহতের ব্যবহৃত এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত দুইজনকে আটক ও ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত ইমন হোসেন অভয়নগর উপজেলার পুড়াটাল গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন, সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মোশারেফ ফকিরের ছেলে রাকিব হোসেন (২৬) ও অভয়নগর উপজেলার দিঘিয়া-শুভরাড়া গ্রামের নওয়াব আলীর ছেলে মিরাজ শেখ (৩২)। মিরাজ শেখ অভয়নগরের প্রেমবাগ গ্রামে শ্বশুর আকবর মোড়লের বাড়িতে থাকেন।
ইমনের ভাই সুমন বলেন, যাত্রীবেসে ইমনের ইজিবাইক ভাড়া নেয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত। তার ভাই নিখোঁজের বিষয়ে অভয়নগর থানায় জিডি করা হয়েছিল।
বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন সাদুল্লাহপুর গ্রামস্থ ভৈরব নদের পাশে মহিবুর রহমানের ধান ক্ষেতে বস্তাবন্দি একটি লাশ পড়ে আছে। সেখানে গিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বস্তাবন্দি অজ্ঞাতনামা লাশটি উদ্ধার করা হয়। এরপর সেখানে উপস্থিত হন কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই’র) পুলিশ পরিদর্শক মোনায়েম কবীরের নেতৃত্বে একটি টিম। পিবিআই যান্ত্রিক উপায়ে নিহতের হাতের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে লাশের পরিচয় সনাক্ত করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন নিহতের মা শাহিনুর বেগম ও ভাই সুমন হোসেন।
নিহতের মা শাহিনুর বেগম বলেছেন, ২৮ এপ্রিল সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয় ইমন। দুপুর ১২টার দিকে তার সাথে শেষ কথা হয়। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ওইদিন রাতে অভয়নগর থানায় এই ব্যাপারে অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে তারা বিভিন্নস্থানে নিখোঁজের সংবাদটি অবগত করান। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে অভয়নগর থানা থেকে মোবাইলে সংবাদ দিয়ে বলা হয় সাদুল্লাহপুর ভৈরব নদের একটি বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া গেছে। সেখানে এসে তার ছেলে ইমনের লাশ বলে তারা নিশ্চিত হন। গামছা পেচিয়ে হত্যার পর মুখে এসিড ঢেলে চেহারার বিকৃত করা হয়েছে।
এদিকে একটি সূত্রের দাবি, আটক দুইজন ইজিবাইক নিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে ২৮ এপ্রিল রাতে নরেন্দ্রপুর ক্যাম্পের পুলিশ আটক ও ইজিবাইকটি উদ্ধার করেছিল। তবে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
বসুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম খান রাসেল বলেন, স্থানীয়দের কাছে সংবাদ পেয়ে ভৈরব নদের পাড়ে লাশ পড়ে আছে বলে জানতে পারেন। পরে সেখানে আসার পরে থানা এবং পিবিআইয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা আাসেন।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, এই হত্যাকা-ে দুইজনকে আটক এবং নিহতের ইজিবাইকটি উদ্ধার করা হয়েছে।

 
									 
					