নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘পৌষ পার্বণে পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খেয়ে/আরও উল্লাস বাড়িয়েছে মনে মায়ের বকুনি খেয়ে।’ পল্লী স্মৃতি কবিতায় বেগম সুফিয়া কামাল শীতের পিঠা খাওয়ার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মায়ের বকুনির কথা লিখেছিলেন।
তবে শনিবার যশোর শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্রাদার্স টিটোস হোমের শিক্ষার্থীদের পিঠা খাওয়ার জন্য মায়ের বকুনি খেতে হয়নি। শিক্ষার্থীরা নিজেদের ইচ্ছামতো পিঠা পায়েস খেয়েছেন। শনিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হয়ে গেল এক অন্যরকম পিঠা উৎসবের।
এদিন স্কুলের গেটে প্রবেশ করেই উৎসবের আমেজটা টের পাওয়া গেল। উৎসবের প্রবেশ মুখেই নানা পিঠার গন্ধে জিভে জল আসার মতো অবস্থা। ঘণ্টাব্যাপী পিঠা উৎসবে নিজেদের তৈরি নানা পিঠার সমাহার নিয়ে হাজির ছিল অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা। টেবিলে সাজিয়ে রাখা পিঠা খেতে কোন বাধা ছিল না। একের অন্যর পিঠা খেতে দেখা যায় উৎসবে। তাছাড়া পিঠা উৎসবের মাধ্যমে অবিভাবক-শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা তৈরি হয়।
নকশি পিঠা, চিতই পিঠা, রস পিঠা, ডিম চিতই, দোল পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান, আন্দশা, কাটা পিঠা, ছিট পিঠা, গোকুল পিঠা, চুটকি পিঠা, মুঠি পিঠা, হাড়ি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, পাতা পিঠা, ঝুড়ি পিঠাসহ আরও কত নাম!
পিঠা সম্ভারে বসে ছিলেন শারমিন আক্তার শিউলি। তিনি পাটি সাপটা, নারকেলের ফুল পিঠা, সাচ পিঠাসহ চার ধরনের পিঠা তৈরি করে এনেছিলেন। অল্প কিছু সময়ের মধ্যে তার পিঠা শেষ হয়ে যায়। তিনি বলেন, পিঠা উৎসবে নতুন নতুন পিঠার স্বাদ নেয়া গেছে। সব মিলেয়ে অভিভাবক শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
আজমাইন পিঠা ঘরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তানজিলা সুলতানা। তিনি বলেন, এই ধরনের কার্যক্রমে শিশুরা খুব আগ্রহী। এটা শিশুদের মনে আনন্দ দিবে। নতুন কিছু শিখতে পারবে।
প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আলী আযম টিটো বলেন, শীত আর পিঠা কথা দুটি যেন একটি অপরটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। পিঠা উৎসবে ৫০ এর অধিক ধরনের পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন অভিভাবকরা। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা নতুন পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে পারছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা করতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।