মহিউদ্দিন সানি, রূপদিয়া: আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে হাটবিলা রূপদিয়া খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম হাতে নিতে যাচ্ছে যশোর জেলা পরিষদ। পাশাপাশি খাল দখলের বিরুদ্ধে সোচ্চার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, যশোর সদরের এসিল্যান্ড, রূপদিয়া বাজার বণিক সমিতিসহ ভুক্তভোগীরা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যশোর জেলা সার্ভিয়ার পরিষদের এম এ মনজু বলেন, এটা যশোর জেলা পরিষদের জমি। এক ইঞ্চি জমিও জেলা পরিষদ দখল করতে দেবে না।
এদিকে এরই মধ্যে ১৯ দখলদারের নাম উল্লেখ করে যশোর সদরের এসিল্যান্ড বরাবর একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন নরেন্দপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ওয়াহিদুজ্জামান। তারা হলেন, রূপদিয়া গ্রামের মকলেচুর রহমান, নুরো ও শরিফুল গাজী, একই গ্রামের আব্দুর রহমান, নূর ইসলাম, রিপন, ইমরান খান, উত্তম, রেজাউল ইসলাম, হাটবিলা গ্রামের রফিকুল ইসলাম, মুথুরাপুর গ্রামের কাশেম, মুন্সেফপুর গ্রামের কৃষ্ণ দত্ত, রাম প্রাসাদ, মফিজ, জামাল, নরেন্দ্রপুরের আজাদ ও মিঠু। এছাড়াও রূপদিয়া মসজিদ কমিটির একটি টয়লেটের হাউজ খালের জমিতে রয়েছে।
গত ৬ জুন যশোর জেলা প্রশাসক বরাবর হাটবিলা রূপদিয়া খালের ওপর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ প্রসঙ্গে একটি আবেদন জমা দেন সদরের এসিল্যান্ড এস এম মিকাইল হোসেন। সেখানে বলা হয়েছে রূপদিয়া গ্রামের মকলেচুর রহমান রূপদিয়া খালের ওপর অবৈধভাবে দোকান ঘর নির্মাণ করছিলেন। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
এর আগেই স্থানীয় নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হন। তিনি তার পক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সুধন্য দাস, ইউপি সদস্য আ. মালেক, মকবুল হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক এবং গোলাম মোস্তফাকে ঘটনাস্থলে পাঠালে তারা মকলেচুর রহমানকে খালের ওপর ড্রেন নির্মাণ বন্ধ রাখতে বলেন। চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ জানান, আমরা জানতে পেরেছি ১৯ জন দখলদার এই খাল দখল করে আছে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে খাল দখলমুক্ত করতে পদক্ষেপ নেব।
গত বৃহস্পতিবার আদেশ উপেক্ষা করে ফের খালের ওপর এস্কেভেটর দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ করছিলো মকলেচুর রহমান। এ ঘটনা জানাজানি হলে সেখানে কয়েকজন সাংবাদিক গিয়ে ছবি তুলতে চাইলে মকলেচুর রহমানের ছেলে মওদুর এক সাংবাদিককে ধাক্কা দেন ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
উল্লেখ্য, রূপদিয়া গ্রামের মকলেচুর রহমান খালের সাত ফুট জমিতে ১০ ইঞ্চি ঢালাই ভিম ও ইটের গাঁথুনি দিয়ে উপরে ছাদ ঢালাই দিয়েছেন। সম্প্রতি তা মাটি দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন।
মকলেচুর রহমানের ছেলে মওদুদ জানান, তাদের ৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। তাদেরকে মৌখিকভাবে কাজ থামিয়ে রাখতে বললেও কোন লিখিত আদেশ দেয়নি। লিখিত দিলে আমি কাজ বন্ধ করে দিব। আমি এখানে হাসপাতাল করে জনগণের সেবা করব। আমি কার সাথে সমঝোতা করব? খালের পাশে আমার জমিতে একটা গাড়ি প্রবেশ করাবো কিভাবে? আমি সাংবাদিকদেরকে এখানে আসতে নিষেধ করার পরেও তারা এখানে এসেছে। বারবার এখানে এসে ছবি তুলছে এজন্য আমি একজন সাংবাদিকের ঘাড়ে হাত রেখে তাকে ছবি তুলতে নিষেধ করেছি। এটা দোষের না।