নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের বেনাপোলসহ দেশের আট পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৭ জুলাই। বুধবার (৩১ মে) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের সই করা পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল সংক্রান্ত জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৮ জুন। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ জুন, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৭ জুলাই।
যশোরের বেনাপোল, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া, চাঁদপুরের মতলব উত্তর, কুমিল্লার দেবিদ্বার, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, শরীতপুরের গোসাইরহাট ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, তফসিল ঘোষণা হওয়ায় বেনাপোল পৌরসভার সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের আনন্দ প্রকাশের খবর মিলেছে। কেউ কেউ ফেসবুকে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার কথা জানান দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে বেনাপোল ইউনিয়নের ১১টা গ্রামের অংশ নিয়ে বেনাপোল পৌরসভা গঠনের পর ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। সেই নির্বাচনে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ওই পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও আর নির্বাচন হয়নি। প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভার নির্বাচন ঠেকাতে এলাকা নিয়ে মামলার কারণে নির্বাচন আটকে যায় বলে এলাকাবাসী মনে করেন।
সূত্র মতে, ২০১২ সালের ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ‘পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন’ সভায় আট দশমিক ৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে যাত্রা শুরু করা এ পৌর এলাকাকে সম্প্রসারণ করে ২৪ বর্গকিলোমিটার করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে বেনাপোল পৌরসভার সীমানা বাড়ানোর করার কাজ শুরু হলে বেনাপোলের নারায়ণপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি তার এলাকার কিছু অংশ পৌরসভার সীমানায় অন্তর্ভুক্তি না করার জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেন। এরপর বেনাপোলের মিয়াদ আলী, আজিবর রহমানসহ আরো ১০ জন উচ্চ আদালতে আরো আট রিট করেন। মামলার কারণেই মূলত নির্বাচন আটকে যায়। তবে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৪২ এর সংশোধনক্রমে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) আইন ২০২২ এর ধারা ৯ অনুযায়ী পৌর পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, বিভিন্ন সময়ে বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। বেনাপোলের মানুষ মানববন্ধন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে স্মারকলিপি পর্যন্ত দেন। অবশেষে তাদের দাবি পূরণ হতে চলেছে।
বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বড়আঁচড়া গ্রামের নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে মামলা থাকায় দীর্ঘদিন ভোট বন্ধ ছিল। এতে হতাশ ছিলেন নাগরিকরা। তফসিল ঘোষণার পর মানুষ খুশি হয়েছেন।