নিজস্ব প্রতিবেদক
দীর্ঘ ১৭ বছর পর যশোর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগা ময়দানে মাঠে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন (সাচ্চু)। দেড় যুগ এই সম্মেলন হওয়ায় সম্মেলন ঘিরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এদিকে, বৃষ্টি উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশে’ দুপুর থেকে
আসতে শুরু করেছেন দলের নেতা–কর্মীরা। পুরো সম্মেলনস্থল ত্রিপল দিয়ে ঢাঁকা থাকাতে নির্বিঘ্নেই চলছে সম্মেলন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সম্মানিত অতিথি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটাজী। প্রধান বক্তা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু। বিশেষ অতিথি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি, যশোর-৩ আসনের সংসদ কাজী নাবিল আহমেদসহ ৬টি আসনের সংসদ সদস্যরা।
সম্মেলনে সভাপতি ও সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। পদপ্রত্যাশী নেতাদের সমর্থনে ব্যানার-ফেস্টুন, বিলবোর্ডে সম্মেলনস্থল, শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বিভিন্ন মোড় ছেয়ে গেছে। সম্মেলনে সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও লেবুতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মোস্তফা কামাল এবং নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির তুহিন। সাধারণ সম্পাদক পদে আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমামুল কবীর ছাড়াও প্রার্থী হতে ‘কয়েক বছর ধরে’ মাঠে রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এসএম নিয়াতম উল্লাহ। শেষ সময় এসে মাঠে নেমেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস এবং গাজী টিপু।
জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৬ সালে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে আসাদুজ্জামান মিঠুকে সভাপতি ও নূরে আলম সিদ্দিকী মিলনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এরআগেও চার বছর আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন আসাদুজ্জামান মিঠু। আর যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন অধ্যক্ষ নূরে আলম মিলন। দীর্ঘদিন মেয়াদোত্তীর্ণের পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর নির্দেশে গত বছরের ২৮ জুন ভেঙে দেয়া হয়। এরপর নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ওই সম্মেলন সফল করতে ভেঙে দেয়া কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠুকে আহবায়ক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ নুরে আলম সিদ্দিকী মিলন ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ইমামুল কবীরকে যুগ্ম আহবায়ক করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এক বছর পার হলেও সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি সম্মেলন আয়োজন করেনি। এজন্য কেন্দ্র থেকে সম্মেলনের দিননির্ধারণ করে দেয়া হয়।
এদিকে, ১৭ বছর পর হতে যাওয়া সম্মেলন ঘিরে শহর জুড়ে সাজ সাজ রব। ফেস্টুন, বিলবোর্ড, ব্যানার, ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের আশপাশ। সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। সম্মেলন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সম্মেলনের মাধ্যমে আসবে নতুন নেতৃত্ব। এবার তরুণরা নেতৃত্বে আসবেন, এমনটি বলছেন তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। এ জন্য আলোচনায় এগিয়ে তরুণ নেতারা।