যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি
নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে একটানা দুইযুগ পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট ইসমত হাসার। এসময়ে দুর্নীতিমুক্ত-প্রভাবমুক্ত ২০টি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়েছেন তিনি। আইনজীবী সমিতির বিতর্কমুক্ত নির্বাচনে শীর্ষ পদে একটানা দায়িত্ব পালনের নিকটতম ইতিহাস তার হাত ধরেই।
১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আইন পেশায় যশোর আইনজীবী সমিতিতে নাম লেখান অ্যাডভোকেট ইসমত হাসার। সততা ও মেধার পরিচয় দিয়ে আইনজীবী হিসেবে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন তিনি। তেমনি সহকর্মীদের কাছে হয়েছেন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। ফলে সব সরকারের আমলে তিনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন। যা নজিরবিহীন বলছেন আইনজীবীরাই।
সমিতির তথ্য মতে, আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে থেকেই পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। ২০০৪ সাল থেকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন ইসমত হাসার। এর আগে তিনি জেলা আইনজীবী সমিতির কয়েকটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সহকারীর দায়িত্ব পালন করেন। তার দায়িত্ব পালনের দুই যুগে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, ১/১১ পরিস্থিত, তত্ত্বাবধায়ক ও অন্তবর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সব আমলেই প্রভাবমুক্ত থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। আইনজীবীরা ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ পেয়েছেন। প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সক্ষম হয়েছেন। ভোটাধিকারের সুযোগ পেয়ে আইনজীবীরা তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন। কেউ কোনদিন অভিযোগ করতে পারেননি। সকল বিজয়ী কিংবা পরাজিত সব পক্ষই তার নির্বাচন পরিচালনায় সন্তুষ্ট থেকেছেন। দেশের বিভিন্ন সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের কথা শোনা যায়। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠে। কিন্তু ‘ইসমত হাসার কমিশন’ এর ব্যতিক্রম। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়ে প্রিয়ভাজনই হয়েছেন ইসমত হাসার’র নেতৃত্বে ২৪টি নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদ।
জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট ইসমত হাসার বলেন, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালনের চেয়ারটি আল্লাহ প্রদত্ত। ওই দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মনে করি এটা আমার দায়িত্ব; ক্ষমতা নয়। একারণে নিরপেক্ষ সঠিকভাবে কাজ করে থাকি।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সকল কাজই পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের মতামত নিয়ে করা হয়। আবার কখনো কখনো সিনিয়র আইনজীবীদের সাথেও আলোচনা করা হয়। আমার মূল উদ্দেশ্য নির্বাচনটাকে প্রভাবমুক্ত, কলঙ্কমুক্ত রেখে ন্যায় নিরপেক্ষভাবে কাজটি শেষ করা। সেক্ষেত্রে কোন প্রার্থী বা তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি সহজেই সমাধান করে ফেলা হয়।
তিনি বলেছেন, যশোরের আইনজীবীরা খুবই সুন্দর এবং ভাল মনের মানুষ। তাই আমি তাদের ভাল নির্বাচন উপহার দিতে পারি। তার এই দুই যুগে জয়ী-বিজয়ী কোন পক্ষই অভিযোগের তীর ছোড়েনি।
আইনজীবী সমিতির সদস্য বুলবুল আহম্মেদ বলেন, তিনি প্রার্থী থাকাকালীন সময়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ইসমত হাসারের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাননি।
সাবেক সহকারী সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাহমিদ আকাশ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তিনি দুইটা নির্বাচন করেছেন। সেই দুইটি নির্বাচনে পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমত হাসারের দায়িত্ব পালনে কোন গাফিলাতি বা ভুলত্রুটি দেখতে পাননি।
বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর আলম পান্নু বলেছেন, যতদিন ধরে দেখছি আইনজীবী সমিতির নির্বাচন পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমত হাসারের কাজে দক্ষতা, ন্যায় পরায়নতায় কোন ত্রুটি পাইনি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্ত্তজা ছোট বলেন, বেশ কয়েকটি নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। কোন সময়ই নির্বাচন পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমত হাসারের ব্যাপারে অভিযোগ পাইনি। ফলে বারবার-ই তাকে ঐতিহ্যবাহী যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
