নিজস্ব প্রতিবেদক: ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে যশোরে মাসব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ উপলক্ষে এক প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মতামত প্রকাশ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম মিলন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধকালীন বৃহত্তর যশোরের মুজিব বাহিনী প্রধান আলী হোসেন মনি, উপ-প্রধান রবিউল আলম, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম রন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা খয়রাত হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্টু চাকলাদার, দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা, যশোর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মুযহারুল ইসলাম মন্টু, সাবেক জেলা অর্থ কমান্ডার কাজী আব্দুস সবুর হেলাল, সাবেক সদর উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আযম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম, তীর্যক যশোরের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর দাস রতন, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা সাধন কুমার দাস, সিনিয়র তথ্য অফিসার মশিউর রহমান, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজি আহমেদ সাঈদ বুলবুল প্রমুখ।
সভার শুরুতে সদ্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজেক আহমেদের মৃত্যুতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ১ মার্চ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণরত প্রতিকৃতি স্থাপন, ৭ মার্চ সকল অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতে বাধ্যতামূলক জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জাতির পিতার ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, নবীন প্রবীণ, ছাত্র-ছাত্রী, সুধীজন, রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে শোভাযাত্রা, সংগীত শিল্পী, নৃত্যশিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা সভা, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
এছাড়া ১৭মার্চ জাতীয় শিশু দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস পালনের লক্ষ্যে পৃথক কর্মসূচি নেয়া হয়। বিশেষ করে ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য পৃথক কর্মসূচি নেয়া হয়। এদিন জেলার সকল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় বাধ্যতামূলক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আলোচনা সভা, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা সভা, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ইত্যাদি রয়েছে।
অপরদিকে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও কালোরাত পালনে নেয়া হয়েছে ভিন্নরূপ কর্মসূচি। এদিন রাত নয়টায় সারা দেশ এক মিনিটের জন্য অন্ধকারে রাখা হবে। এদিন শহরে বা গ্রামের কোথাও আলোকসজ্জা করা যাবে না।
২৬ মার্চ পালিত হবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এদিন ৫০ টি পতাকা সজ্জিত ট্রাকে করে বর্ণাঢ্য র্যালির মধ্য দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে পালন করা হবে মুক্তির উৎসব। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে পতাকাবাহি ট্রাক জেলার উপজেলাগুলো প্রদক্ষিণ করবে। এছাড়া জেলখানা ও হাসপাতাল ও শিশু সদনে পরিবেশন করা হবে ভাল খাবার, বিকেলে হবে আলোচনা সভা, বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ পুরস্কার বিতরণ করা হবে।
সভায় জেলা প্রশাসক জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচির সাথে সঙ্গতি রেখেই দিবসটি উদযাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ ও আয়োজন করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলার সর্বত্র এই কর্মসূচি যথাযথভাবে পালিত হবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। কৌশলগতভাবে সেদিনই তিনি দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ঘোষণা। ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী সেই ভাষণটি স্থান করে নিয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে। ভাষণের দিনটি গতবছর সারাদেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়।