নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ
সোনালী ব্যাংক ঝিনাইদহ অঞ্চলের মাগুরা শাখার এক গ্রাহকের ৮৭ লাখ টাকা ব্যাংক জালিয়াতচক্র তার সঞ্চয়ী হিসাব থেকে তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ দায়ের হওয়ার খবরে ব্যাংকপাড়ায় তা রীতিমত আলোচনার ঝড় তুলেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে গত ১৭ আগস্ট লিখিত অভিযোগে মাগুরার ঊষা এসসি লিমিটেড-র চেয়ারম্যান দাবিদার টিটুল মিয়া অভিযোগ করেন, সোনালী ব্যাংক মাগুরা শাখায় তিনি ২০১৩ সালের ১২ আহস্ট একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। হিসাব নম্বর ছিলো ২০১৮৩৫। যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২৪১৪২০০০১৮৩৫২ নম্বরে রুপান্তরিত হয়। ওই হিসাবে তিনি নিজে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেয়া চেকের মাধ্যমে মোট ৮৭ লাখ টাকা জমা করেন। কিন্তু তার অনুমতি ছাড়াই চেকবই ইস্যু করে তার সমুদয় টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। অথচ, তিনি নিজে কোন চেকবই গ্রহণ করেন নি। এর দায়ভার ব্যাংককেই নিতে হবে। তিনি প্রতারকচক্রকে সনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
টিটুল মিয়ার ব্যবসায়িক অংশীদার ফিরোজ হোসেনের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, যেসব চেকের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে তার প্রত্যেকটিতে টিটুল মিয়ার স্বাক্ষর রয়েছে। তিনি নিজে ব্যাংকে গিয়ে বা তাকে (ব্যবসায়িক অংশীদার ফিরোজ হোসেনকে) চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করে মিথ্যে তথ্য দিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্টদের ফাঁসাতে চাচ্ছেন, এটা দুরভিসন্ধিমূলক।
ঊষা এসসি লিমিটেড’র চেয়ারম্যান টিটুল মিয়ার সাথে তার তিনিটি মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে দুটি বন্ধ পাওয়া যায় এবং একটি তিনি রিসিভ না করায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে তার স্থায়ী ঠিকানা মাগুরার ইসলামপুরপাড়ার ৫৭ শহীদ মিন্টু রোডের বাড়িতে গেলেও এলাকাবাসী তার অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেনি।
এই অভিযোগের বিষয়ে সোনালী ব্যাংক মাগুরা শাখার ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) দিদারুল আলমের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, ঊষা এসসি লিমিটেড’র নামে খোলা হিসাবটি টিটুল মিয়ার স্ত্রী সেলিনা আক্তার টিসাকে নমিনি মনোনীত করে খোলা হয়। তিনি কোনদিন কোন চেকবই নেননি বলে দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি ওইদিনই ব্যাংক থেকে একটি চেকবই নেন যেখানে ৭৭৮১৯০১ থেকে ৭৭৮২০০০ নম্বরের ১শ’টি পাতা ছিল। ২৫.০২.২০১৬ থেকে ২৬.০৬.২০১৯ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ৮টি চেকের মাধ্যমে জমাকৃত সমুদয় টাকা গ্রাহক নিজেই চেকে স্বাক্ষর দিয়ে তুলে নিয়েছেন। কোন কোন সময় তার ব্যবসায়িক অংশীদার ফিরোজ হোসেনও উপযুক্ত স্বাক্ষরযুক্ত চেকের মাধ্যমে টাকা তুলে ঊষা এসসি লিমিটেড-র দায়দেনা মেটান। ওই হিসাবে শুধু চেকের মাধ্যমেই টাকা জমা হত। শেষ লেনদেন হয়েছে ২০১৯ সালের ২৬ জুন। দীর্ঘ ছয়বছর গ্রাহক ব্যাংকে আসেননি বা কোন প্রকার যোগাযোগও করেননি। তার হিসাব খোলার সময় কোন মোবাইলফোন নম্বরও তিনি দেননি। হিসাবের লেনদেনে স্বচ্ছতার দায়বদ্ধ থাকলেও এসব লেনদেন গ্রাহকের স্বাক্ষরেই হয়েছে। এখানে ব্যংকের কোন দায়বদ্ধতা নেই।