নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিপণ দাবিতে মণিরামপুরে বিএনপির এক কর্মীকে তুলে নিয়ে মারপিটের অভিযোগে নয় বছর পর এক ওসিসহ ১১জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়ার আজগরের ছেলে অনিক হোসেন জনি মামলাটি করেছেন। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহমেদ মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআইকে) তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুজ।
আসামিরা হলেন, মণিরামপুর থানার সাবেক ওসি খবির উদ্দীন, খেদাপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের সাবেক ইনচার্জ এসআই সোহরাব, মণিরামপুর উপজেলার শৈলী গ্রামের মৃত নুর বকস্ গাজীর ছেলে আতিয়ার রহমান, মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে আশিকুর রহমান, খাটুরা গ্রামের মৃত আজিবর মোল্যার ছেলে আবুল কালাম আজাদ, মৃত মোজাম মন্ডলের ছেলে ইসহাক আলী, শৈলী গ্রামের মৃত মোজাহারের ছেলে মাস্টার রবিউল ইসলাম, মদনপুরের মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম শফি, ছোট ছালামতপুরের ইব্রাহিমের ছেলে লাল্টু, মধুপুরের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মনি ও বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সুরেন তরফদারের ছেলে শুসেন তরফদার।
বাদী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তিনি বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। এই মামলার সাক্ষী মনিরামপুর খাটুরা গ্রামের রবিউল ইসলাম কবির ও শৈলীর বাবলুর রহমান তার নিকট আত্বীয়। ২০১৫ সালে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের সময় বাদী আত্মীয় বাড়িতে অবস্থান করেন। ওই বছরের পহেলা জুলাই রাত ১০ টার দিকে খেদাপাড়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে তিনি অবস্থান করছিলেন। এমন সময় এসআই সোহরাবের নেতৃত্বে ছয়জন পুলিশ কনস্টেবল তাকে উঠিয়ে নিয়ে খেদাপাড়া পুলিশ ক্যাম্পে যায়। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন মণিরামপুর থানার ওসি। এসময় তাকে মারপিট করে একই সাথে বিএনপির রাজনীতি করার জন্য নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেয়া হয়। এছাড়া ক্রসফায়ারের ভয় দেখায়। এক পর্যায় তার কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়। পরে বাদী বাড়িতে মোবাইল করে তার স্বজনেরা থানায় গিয়ে ছয় লাখ টাকা পুলিশ সদস্যদের হাতে তুলে দেয়। সে সময় অন্য আসামিরাও উপস্থিত ছিলো। যাদের কেউ কেউ পুলিশের সোর্স আবার কেউ কেউ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। টাকা নিয়ে বাদীর পরিবারকে বলা হয় চলে যেতে পরের দিন দুপুরের মধ্যেই অনিক হোসেন জনি বাড়িতে পৌছে যাবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু পরের দিন আর তাকে ছেড়ে দেয়নি। পরে জানতে পারেন জনিকে একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ওইসময় আসামিরা ছিলেন আওয়ামী ঘরানার। ফলে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলারমত কোনো সাহস ছিলোনা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বাদী আদালতে এই মামলাটি করেছেন।