নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের হামিদপুরে আসাদুজ্জামানের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে সাতদিনের মধ্যে মামলা নেয়া এবং তা নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ২৪ জুলাই বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে বেঞ্চ পুলিশের মহাপরিদর্শককে এই নির্দেশনা দিয়েছেন।
যশোরের পুলিশ সুপার ও কোতোয়ালি থানার ওসিকে এই নির্দেশনার অনুলিপির কপি পাঠানো হয়েছে।
বিষযটি নিশ্চিত করেছেন আসাদুজ্জামানের আইনজীবী মোহাম্মদ শাহীন হাওলাদার।
এরআগে আসাদুজ্জামান কোতোয়ালি থানায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, তার ছেলে পিয়াস এবং মাস্টার নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে তিনি পুলিশ সুপার বরাবরও অভিযোগ করেন। সেখান থেকেও কোনো সহায়তা পাননি। গত ২ জুলাই তিনি আইজিপি বরারব অভিযোগ করেন। তাতেও কোনো ফল না পেয়ে তিনি শেষশেষ উচ্চ আদালতের রিট পিটিশন দাখিল করেন।
আসাদুজ্জামানের অভিযোগ, ১৯৯৩ সালে ব্যাংকের নিলামের মাধ্যমে জমিটি কিনে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে ভোগ দখল করে আসছিলেন। এই জায়গার সাবেক মালিক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিয়াই নুরুল ইসলাম। তিনি এই জায়গা শিল্প ব্যাংকে মর্টগেজ দিয়েছিলেন। ওই ব্যাংক এই জায়গা নিলামে বিক্রি করলে তিনি তা ক্রয় করেন। গত বছর নুরুল ইসলামের পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম এই জমি দখলের জন্য লোকজন নিয়ে আসেন। কিন্তু সে সময় স্থানীয়দের তোপের মুখে দখল করতে পারেননি। গত ২৭ জুন আবারও তারা আসাদুজ্জামানের বাড়িতে হানা দেন। এসময় আটটি বসতঘর এস্কেভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, গবাদিপশু ও ধান ও গম লুটপাট করা হয়।
আসাদুজ্জামান এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম মিলন, তার ছেলে পিয়াস ও মাস্টার নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি। পরবর্তীতে তিনি এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এমনকি পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও দেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই তিনি ন্যায় বিচার পাননি। বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন।
রিট পিটিশনে আরও উল্লেখ করা হয়, শহিদুল ইসলাম মিলন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এছাড়া কোতোয়ালি থানার ওসির সাথেও তার সখ্যতা রয়েছে। ফলে তিনি মামলা রেকর্ড করছেন না। তিনি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন।
আসাদুজ্জামানের আইনজীবী মোহাম্মদ শাহীন হাওলাদার জানান, হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিলের পরই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেয় আদালত। মূলত আসাদুজ্জামান যশোরে ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ফলে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। উচ্চ আদালত শুনানি শেষে তার অভিযোগ আমলে নিয়ে সাতদিনের মধ্যে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নিস্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছেন।
যশোরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, এ বিষয়ে তিনি এখনও কোনো নির্দেশনা পাননি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আসলে অবশ্যই সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
